১০ টাকার মাস্ক ১৫০ টাকা শুনে ডিসি বললেন ‘লবণকাণ্ড’
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি পটুয়াখালী
প্রকাশিত: ০৮:৫৩ পিএম, ০৯ মার্চ ২০২০
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজন রোগী শনাক্তের পর পটুয়াখালীতে চাহিদা বেড়েছে মাস্কের। একই সঙ্গে বেড়ে গেছে মাস্কের দাম। ১০ টাকার মাস্ক বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা।
সোমবার (০৯ মার্চ) বিকেলে শহরের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়। কেউ কেউ বলছেন গুজবে লবণ কেনার হিড়িক পড়ার মতো এবার মাস্ক কেনার হিড়িক পড়েছে।
শহরের শিশুপার্ক এলাকার মাস্ক বিক্রেতা অপু বলেন, আগে ওয়ান টাইম প্রতি পিস মাস্ক পাঁচ টাকায় বিক্রি করেছি। গত ১৫ দিন ধরে ১৫ টাকায় বিক্রি করেছি। দুদিন আগেও মাস্কের দাম ৩০-৪০ টাকা ছিল। কিন্তু গতকাল বাংলাদেশে করোনা আসার খবরের পর মাস্কের দাম বেড়ে ১০০ টাকা হয়। আজ সেসব মাস্ক ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
শহরের আদালতপাড়ার বাসিন্দা সোনিয়া বলেন, সোমবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত বিভিন্ন দোকানে গিয়ে কোনো মাস্ক পাইনি। অবশেষে নিউমার্কেটের এক ব্যবসায়ীকে অনেক অনুরোধের পর একটা মাস্ক দেন। দাম রেখেছেন ৬০ টাকা।
স্টাইল কর্নারের মালিক মিজানুর রহমান বলেন, সোমবার দুপুরে ২৫ পিস মাস্ক ১৫ টাকা দরে কিনে এনেছিলাম। দুই ঘণ্টার মধ্যে সব মাস্ক বিক্রি হয়ে গেছে। ৩০-৪০ টাকা দরে মাস্ক বিক্রি করেছি। পরে জানতে পারি আরও দাম বেড়েছে।
শহরের বিভিন্ন ফার্মেসি ঘুরে দেখা যায়, অনেক ফার্মেসিতে মাস্ক নেই। কিছু দোকানে ওয়ান টাইম মাস্ক আছে। সেগুলো ১২০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেউ কেউ এই দামেই মাস্ক কিনে বাড়ি ফিরছেন।
শহরের সোনালী ফার্মেসির বিক্রয়কর্মী রাজন বলেন, ভালো কোনো মাস্ক নেই। সব বিক্রি হয়ে গেছে। এখন ওয়ান টাইম মাস্ক আছে। প্রতি পিস ১০ টাকা করে বিক্রি করছি। তাও শেষ পর্যায়ে। একেকজন চার-পাঁচ পিস করে মাস্ক কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তবে মাস্কের সংকট রয়েছে। রাতে আরও মাস্ক আসবে।
লোকনাথ স্টোরের ম্যানেজার পলাশ কর্মকার বলেন, সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দোকানের সব মাস্ক বিক্রি হয়ে গেছে। মাস্ক দেয়ার জন্য মোকামে বলেছি। তারা বলেছে মাস্ক শেষ। এখন আর মাস্ক পাওয়া যাবে না।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বিষয়টি লবণকাণ্ডের মতো ঘটনা। গুজবে লবণ কেনার হিড়িকের মতো অবস্থা। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কেউ যেন মাস্ক না কেনে। আমরা সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর রাখছি। বাজার মনিটরিং করা হবে।
জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো. সেলিম মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, এ বিষয়ে আমাদের তদারকি রয়েছে। সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানো হয়েছে এমন অভিযোগ পাইনি আমরা। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে বাজারে অভিযান চালানো হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ নভেম্বর লবণ সংকটের গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয়। এতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় হঠাৎ করেই লবণ কেনার হিড়িক পড়ে যায়। তবে ওই সময় লবণের সংকট দেখা দেয়নি; এমনকি দামও বাড়েনি।
মহিব্বুল্লাহ্ চৌধুরী/এএম/এমএস