কনেসহ এখনও সাতজন নিখোঁজ, অপেক্ষায় বর ও স্বজনরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক রাজশাহী
প্রকাশিত: ০৩:২৭ পিএম, ০৭ মার্চ ২০২০

নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ কনে সুইটি খাতুন পূর্ণিমাসহ সাতজনের সন্ধানে রাজশাহীর পদ্মা নদীর পাড়ে অপেক্ষা করছেন স্বজনরা। নৌকাডুবির প্রায় ১৬ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ায় তাদের জীবিত উদ্ধারের আশা ছেড়েই দিয়েছেন তারা।

শনিবার বেলা সোয়া ১টার দিকে দুর্ঘটনাস্থলের কাছ থেকে কনের খালাতো ভাই এখলাসের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় জেলেরা জাল ফেলে তার মরদেহ উদ্ধার করেন। মরদেহ তীরে আসতেই হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। উদ্ধার করা মরদেহটি রামেক হাসপাতাল মর্গে নেয়া হয়েছে।

এর আগে সকালে ভাটিতে চারঘাটের ইউসুফপুর বিওপির সামনে পদ্মা থেকে কনের চাচি মনি বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে বিজিবি। মর্মান্তিক এ নৌকাডুবিতে এখন পর্যন্ত তিনজনের মরদেহ উদ্ধার হলো। শুক্রবার উদ্ধার করা হয়েছে কনে সুইটির ভাগনি মরিয়ম খাতুনের (৮) মরদেহ। অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধারের পর হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

jagonews24

এখনও নিখোঁজ মনি বেগমের স্বামী শামীম ও মেয়ে রশ্মি, কনে সুইটি, কনের দুলাভাই রতন, কনের খালা আঁখি, কনের ফুপাতো বোনের মেয়ে রুবাইয়া।

নৌকাডুবিতে জীবিত উদ্ধাররা হলেন বর আসাদুজ্জামান ওরফে রুমন আলী (২৬), কনের বোন বৃষ্টি খাতুন (২২), নৌকার মাঝি খাদিমুল ইসলাম (২৮), সুমন আলী (২৮) ও তার স্ত্রী নাসরিন বেগম (২২) এবং মেয়ে সুমনা আক্তার (৬)। দ্বিতীয় দিনের মতো উদ্ধার তৎপরতা চলছে। শনিবার দুপুরে অভিযানে অংশ নিয়েছে বিআইডব্লিউটিএর পাঁচ সদস্যের একটি দল।

সকালে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। তাদের সঙ্গে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয় নৌপুলিশ ও বিজিবি।

নিখোঁজ স্বজনদের সন্ধানে পদ্মাপাড়ে অপেক্ষা করছেন বর রুমন। কথা বলার মতো মানসিক অবস্থা নেই তার।

jagonews24

রুমন জানান, কনেসহ তিনি যে নৌকায় ছিলেন আচমকা সেটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। এরপর দমকা হাওয়ায় তলিয়ে যায় নৌকাটি। ওই সময় তিনিসহ কয়েকজন যাত্রী সাঁতরে তীরে ফেরেন। তবে অন্য নৌকাটি কীভাবে তলিয়ে গেছে তিনি জানেন না।

অনুসন্ধান ও উদ্ধার সমন্বয় কেন্দ্রের কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন আলো ওয়াদুদ বলেন, সকাল থেকে যৌথ উদ্ধার অভিযান চালছে। দুপুরের দিকে দুর্ঘটনাকবলিত নৌকা দুটির অবস্থান নিশ্চিত হওয়া গেছে। উজান ও ভাটিতেও তারা উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন।

তিনি জানান, নৌকা দুটিতে ৪২ জন আরোহী ছিলেন। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৩২ জনকে। মরদেহ উদ্ধার হয়েছে তিনজনের। এখনও নিখোঁজ কনেসহ সাতজন।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) পদ্মার ওপারের পবা উপজেলার চরখিদিরপুর এলাকার ইনসার আলীর ছেলে আসাদুজ্জামান রুমনের সঙ্গে একই উপজেলার ডাঙেরহাট এলাকার শাহীন আলীর মেয়ে সুইটি খাতুনের বিয়ে হয়।

jagonews24

শুক্রবার (৬ মার্চ) বরের বাড়ি থেকে বর-কনেকে নিয়ে আসছিল কনেপক্ষ। সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজশাহী নগরীর শ্রীরামপুর ডিসির বাংলো এলাকায় পদ্মা নদীতে ডুবে যায় নৌকাগুলো।

খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রাজশাহী সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন, পবা-মোহনপুর আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দীন ও জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক। তারা হাসপাতালে উদ্ধারকৃতদের খোঁজ নেন।

ফেরদৌস/এমএএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।