সন্দ্বীপ-নোয়াখালীর ভূমি বিরোধ মেটাতে আসছেন ভূমিমন্ত্রী

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক (সন্দ্বীপ)
প্রকাশিত: ০৫:০১ পিএম, ০৩ মার্চ ২০২০

নদী ভাঙন, বন্যা, জলোচ্ছ্বাসের সঙ্গে প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে জীবন সংগ্রামে টিকে থাকা মানুষের আবাসস্থল চট্টগ্রামের একমাত্র দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপ। এক সময়কার বিশাল আয়তনের সন্দ্বীপ নদী ভাঙনের কবলে পতিত হয়ে যার বর্তমান আয়তন ঠেকেছে ৬৮ কিলোমিটার। প্রকৃতির নিয়মে সন্দ্বীপের পশ্চিম অংশে চর জেগেছে পাঁচ বছর আগে।

জেগে উঠা চরের মালিকানার দাবিতে গত কয়েক বছর থেকে কথার যুদ্ধে মেতেছে পাশের জেলা নোয়াখালী। এ নিয়ে আইনি লড়াইয়ে নেমেছেন সন্দ্বীপের মানুষ। যে মামলাটি (হাইকোর্ট রিট নম্বর-৭০৯৮) হাইকোর্ট নিষ্পত্তির জন্য অপেক্ষমাণ। কোন প্রকার আইন আর নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ইতোমধ্যে সন্দ্বীপের মানুষের আদিবাস ভাসানচরকে নোয়াখালীর হাতিয়ার থানা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যা নিয়ে গত বছর জুড়ে আন্দোলনে সরব ছিল সন্দ্বীপের নানা শ্রেণি পেশার মানুষ।

১৯৫৪ সালে সন্দ্বীপ নোয়াখালী জেলা থেকে চট্টগ্রাম জেলার অধীনে আসার পর সন্দ্বীপ নোয়াখালী সীমানা বিরোধ চলে আসছে। জেগে উঠা ভূমি-ভাসানচর, জাহাজ্জারচর (স্বর্ণদ্বীপ) সন্দ্বীপের দাবি করে আন্দোলন করে আসছে সন্দ্বীপবাসী। বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের জন্য আলোচিত ভাসানচর ইস্যুতে গত ৩ বছর ধরে আন্দোলন করে আসছে সন্দ্বীপবাসী। ভাসানচর সন্দ্বীপের অতি নিকটে হওয়ায় সন্দ্বীপবাসীর দাবি করে আসছে এ চর সন্দ্বীপের হারিয়ে যাওয়া ন্যায়ামস্তি ইউনিয়ন। অন্যদিকে ভাসানচর হাতিয়ার স্বীকৃতি দিয়ে সম্প্রতি থানা ঘোষণা করে সরকার। থানা ঘোষণা ও রোহিঙ্গার পুনর্বাসনে আপত্তি না থাকলেও ভূমির স্বীকৃতিতে অটল সন্দ্বীপবাসী।

সন্দ্বীপ-নোয়াখালী ভূমিবিরোধ নিরসনে আগামীকাল বুধবার সন্দ্বীপ আসবেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মাঈন উদ্দীন মিশন জাগো নিউজকে বলেন, সন্দ্বীপ-নোয়াখালীর হাতিয়ার সঙ্গে বিরোধ নিরসনে সন্দ্বীপে মন্ত্রীর এ সফর। সকাল ১০টায় হেলিকপ্টারযোগে ভাসানচর যাবেন, সেখান থেকে হাতিয়া। হাতিয়া থেকে সন্দ্বীপ আসবেন। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন।

সম্মিলিত সন্দ্বীপ অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসানুজ্জামান সন্দ্বীপি জাগো নিউজকে বলেন, আমরা দিয়ারা জরিপের মাধ্যমে সন্দ্বীপ নোয়াখালীর সীমানা নির্ধারণের জন্য আন্দোলন করে আসছি। ভাসানচর সন্দ্বীপের অতি নিকটে হওয়ার পরও কীভাবে নোয়াখালীর হাতিয়ার হয়, তা আমার বোধগম্য নয়। আশা করছি, মন্ত্রী সরেজমিনে বিষয়টি অনুধাবন করবেন। আমরা আশার আলো দেখছি।

এ বিষয়ে সন্দ্বীপ নোয়াখালী সীমানা নির্ধারণ মামলার রিট আবেদনকারী মনিরুল হুদা বাবন বলেন, দিয়ারা জরিপের মাধ্যমে সন্দ্বীপের ৬০ মৌজার বুঝিয়ে দেয়ার দাবিতে ২০১৮ সালে হাইকোর্ট মামলা করি। জেগে উঠা ভূমির ২২ মৌজার অবস্থান চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলায়। আদালতের রুল অনুযায়ী গেজেট প্রকাশ স্থগিত না করে অবিলম্বে চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার নামে ঘোষণা করা আমাদের ন্যায্য দাবি। কোনো প্রকার টালবাহানা সন্দ্বীপবাসী মেনে নেবে না।

জেএইচ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।