বৃত্তি পেয়েছে সেই লিতুন জিরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি যশোর
প্রকাশিত: ০৭:২৪ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

মুখে ভর দিয়ে লিখেই দুই হাত-পা ছাড়াই জন্ম নেয়া সেই লিতুন জিরা এবার পিইসি পরীক্ষায় বৃত্তি পেয়েছে। লিতুন জিরা যশোরের মণিরামপুর উপজেলার শেখপাড়া খানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে। সে এবার উপজেলার খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিইসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর আগে লিতুন জিরা জিপিএ-৫ লাভ করে। বৃত্তি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন লিতুন জিরার বাবা হাবিবুর রহমান।

লিতুন জিরার বাবা হাবিবুর রহমান ও মা জাহানারা বেগম জানান, দুই হাত ও পা ছাড়াই লিতুন জিরা জন্মগ্রহণ করে। জন্মের পর মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করতেন তারা। এখন মেয়ের মেধা তাদের আশার সঞ্চার করছে। লিতুন জিরা আর দশজন শিশুর মতো স্বাভাবিকভাবেই খাওয়া-দাওয়া, গোসল সব কিছুই করতে পারে। মুখ দিয়েই লিখে সেতার চমৎকার হাতের লেখা যে কারও দৃষ্টি কাড়বে। এসময় কথা হয় তার সঙ্গে।

লিতুনের একটাই ইচ্ছা, পরনির্ভর না হয়ে লেখাপড়া শিখে নিজেই কিছু করতে চায় সে। কিছুদিন আগে মারা যাওয়া দাদুর জন্য খুব মন খারাপ লিতুন জিরা’র। বৃত্তি পাওয়ার খবরে লিতুন জিরার দাদু বেঁচে থাকলে খুব খুশি হতেন বলে জানায় লিতুন জিরা।

স্থানীয়রা জানায়, লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহী লিতুন জিরা প্রখর মেধাবী। হুইল চেয়ারেই বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে এ-প্লাস পেয়ে মেধার সাক্ষর রেখেছে। তার বাবা উপজেলার এ আর মহিলা কলেজের প্রভাষক। তিনি ১৭ বছর ধরে ওই কলেজে চাকরি করলেও আজও কলেজটি এমপিওভুক্ত হয়নি। তার বাবাই সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। কিন্তু বেতন না পাওয়ায় খুব কষ্টে তাদের সংসার চলে।

লিতুন জিরার প্রধান শিক্ষক সাজেদা খাতুন বলেন, তার ২৯ বছর শিক্ষকতা জীবনে লিতুন জিরার মতো মেধাবী শিক্ষার্থীর দেখা পাননি। এক কথায় সে অসম্ভব মেধাবী। শুধু লেখাপড়ায় নয়, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও অন্যদের থেকে অনেক ভালো।

মিলন রহমান/এমএএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।