রাজশাহীতে সহকারী জজকে লাঞ্ছিতের অভিযোগে মামলা


প্রকাশিত: ০৩:২৯ এএম, ০৮ অক্টোবর ২০১৫

রাজশাহীতে এক সহকারী জজসহ আদালতের কয়েকজন কর্মকর্তাকে মারপিট, চাঁদা দাবি, ছিনতাই, হত্যার চেষ্টাসহ নানা অভিযোগে রাজশাহী রেলস্টেশনের ছয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর নামে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

গত সোমবার দুপুরে রাজশাহী চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (ক) অঞ্চল আদালতে সহকারী জজ আদালতের পেশকার সিরাজ উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। যার সি.আর মামলা নং-৮৮০/১৫ (বোয়ালিয়া), ধারা : ৩২৩/৩৭৯/৩৮৫/৩০৭/৫০৬(২)/৩৪ দ. বি. ও তারিখ : ০৫/১০/১৫ইং।

মামলার আসামিরা হলেন, রাজশাহী রেলস্টেশনের আরএসএম রিলিভিং আতিকুর রহমান, এ.এস.এম কামরুল হাসান, পয়েন্টম্যান মুরাদ, টিসি জয়ন্ত, পয়েন্টম্যান আজাদ ও সিগন্যালম্যান শাহীন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয় যে, গত শুক্রবার ২ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টার দিকে রাজশাহী রেলস্টেশনে মামলার বাদী সিরাজ উদ্দিনসহ সাক্ষী মোহনপুর আদালতের সহকারী জজ সুব্রত মল্লিক, এম.এম (১) আদালতের বেঞ্চ সহকারী একেএম সোহেল রানা, জেলা জর্জ কোর্টের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুজ জহির, হিসাবরক্ষক হাবিবুর রহমান ওরফে পাতাসহ আরো কয়েকজন রাজশাহী জেলা ও দায়েরা জজের গত ৩ অক্টোবর রাজশাহী টু ঢাকাগামী ট্রেনের চারটি টিকিট ক্রয়ের উদ্দেশ্যে যান। মামলার ১নং সাক্ষী মোহনপুর আদালতের সহকারী জজ সুব্রত মল্লিক আসামিদের নিকট টিকিট ক্রয়ের কথা বলেন। এসময় তারা টিকিটের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন। এ ঘটনায় বাদীসহ উপস্থিত সাক্ষীরা টিকিটের অতিরিক্ত মূল্য দাবির প্রতিবাদ করেন। এসময় আসামিদের সঙ্গে বাদী পক্ষের তর্ক-বিতর্কের সৃষ্টি হয়।

এক পর্যায়ে ১নং আসামির হুকুমে মামলার বাদী সিরাজ ও ২নং সাক্ষী এম.এম (১) আদালতের বেঞ্চ সহকারী একেএম সোহেল রানাকে আসামিরা গালিগালাজ করে কাঠের লাঠি দিয়ে মারপিট করে মামলার ২নং সাক্ষীকে একটি রুমে আটকে রাখেন। পরে আসামিরা মামলার বাদী সিরাজকে মাটিতে ফেলে দিয়ে ১নং আসামি তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা টিপে ধরেন এবং তার কাছে থাকা ৭ হাজার ৫শ ৩৫ টাকা কেড়ে নেন। মামলার ২নং আসামি বাদীর কাছ থেকে ৫ হাজার ২শ টাকা মূল্যের একটি মোবাইল সেট কেড়ে নেন। ২নং সাক্ষী বাদীকে বাচাঁনোর চেষ্টা করলে আসামিরা চাকু দিয়ে জীবননাশের হুমকি দিয়ে গালিগালাজ করেন। এসময় ৩নং আসামি তার কাছে থাকা ১ হাজার ৭শ ৫০ টাকা ও ৪নং আসামি তার কাছে থাকা মোবাইল সেট ছিনিয়ে নেন। পরে তাকে সবাই মিলে মারপিট করেন। এসময় মামলার বাদী  ও ২নং সাক্ষী এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে আসামিরা তাদের কাছে পঞ্চাশ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন।

পরে অন্যান্য সাক্ষীদের আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে তাদের কক্ষ থেকে বের করে আনেন। এ ঘটনার জের ধরে রাজশাহী চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজেস্ট্রেট (ক) অঞ্চল আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী এজাজুল হক এজাজ জাগো নিউজকে জানান, গত সোমবার দুপুরে রাজশাহী চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজেস্ট্রেট (ক) অঞ্চলের আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার শুনানি শেষে আদালতটির বিচারক মো. জাহিদুল ইসলাম আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আসামিদের গ্রেফতার করতে সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।

এ ব্যাপারে মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদত হোসেন জাগো নিউজকে জানান, মামলা সংক্রান্ত কোনো কাগজ এখনো থানায় আসেনি। কাগজ হাতে পেলে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে, রেলস্টেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে শ্রমিকলীগ নেতা ওয়ালী খানসহ সংগঠনটির বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।

শাহরিয়ার অনতু/এমজেড/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।