মসজিদের দানবাক্সে দেড় কোটি টাকা, স্বর্ণালঙ্কার-বৈদেশিক মুদ্রা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কিশোরগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৭:৫৫ পিএম, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে এবার ১ কোটি ৫০ লাখ ১৮ হাজার ৪৯৮ টাকা পাওয়া গেছে। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গণনা শেষে এই টাকার হিসাব পাওয়া যায়।

টাকা ছাড়াও দান হিসেবে অনেক স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গেছে। তবে আগের বারের তুলনায় এবার ৬৬ হাজার ১০০ টাকা কম পাওয়া গেছে। তিন মাস আগে ১০৩ দিনে মসজিদের দানবাক্সে পড়েছিল ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা

তিন মাস ২০ দিন অর্থাৎ ১১০ দিন পর এবার মসজিদের দানবাক্স খোলা হয়েছে। এর আগে গত ২৬ অক্টোবর ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স খোলা হয়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার সকাল ৯টার দিকে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের আটটি দানবাক্স খোলা হয়। পরে দানবাক্সের টাকাগুলো বস্তায় ভরা হয়।

এরপর মসজিদের দোতলার মেঝেতে রেখে শুরু হয় গণনার কাজ। বিকেল ৪টায় গণনা শেষে দানের এ টাকার হিসাব পাওয়া যায়। টাকার পাশাপাশি দানবাক্সে পাওয়া গেছে স্বর্ণালঙ্কার এবং বৈদেশিক মুদ্রা।

টাকা গণনার কাজ তদারকি করেছেন কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, পাগলা মসজিদ কমিটির সম্পাদক পৌর মেয়র মাহমুদ পারভেজ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফজলে রাব্বি, মাহমুদুল হাসান, উবাইদুর রহমান সাহেল, পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শওকত উদ্দীন ভূঞা ও রূপালী ব্যংকের কিশোরগঞ্জ শাখার কর্মকর্তারা।

jagonews24

কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, দেড় কোটি নগদ টাকা ছাড়াও পাওয়া গেছে বিভিন্ন দেশের মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার। দানে পাওয়া ছাগল, হাঁস-মুরগি প্রতি সপ্তাহে নিলামে বিক্রি করা হয়।

গত ১৩ জুলাই পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে ১ কোটি ১৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪৫০ টাকা পাওয়া যায়। ওই সময় বৈদেশিক মুদ্রাসহ বেশকিছু স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গেছে। এর আগে গত ১৩ এপ্রিল দানবাক্স খোলার পর ১ কোটি ৮ লাখ ৯ হাজার ২০০ টাকা পাওয়া যায়

কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের অবস্থান। এখানে ইবাদত বন্দেগি করলে বেশি সওয়াব পাওয়া যায় বলে মানুষের বিশ্বাস। রোগ-শোক বা বিপদে মসজিদে মানত করলে মনের বাসনা পূর্ণ হয়। এসব বিশ্বাস থেকে এখানে প্রতিনিয়ত দান খয়রাত করে মানুষ। তিন মাস পর পর খোলা হয় মসজিদের দানবাক্স। প্রতিবারই টাকার পরিমাণ ছাড়িয়ে যায় কোটি টাকা। নানা শ্রেণিপেশা আর ধর্মের লোকজন এখানে আসেন মানত আদায় করতে।

দানবাক্স ছাড়াও প্রতিদিন নানা শ্রেণিপেশা আর ধর্মের মানুষ মানত আদায় করতে ছুটে আসেন পাগলা মসজিদে। নগদ টাকা ছাড়াও তারা নিয়ে আসেন চাল-ডাল-গবাদি পশুসহ বিভিন্ন সামগ্রী। দিন শেষে এসব পণ্য নিলামে বিক্রি করে ব্যাংকে টাকা জমা রাখা হয়।

দানকৃত টাকায় পাগলা মসজিদ ও ইসলামী কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে অবশিষ্ট টাকা জমা রাখা হয় ব্যাংকে। দানের টাকা থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেয়া হয়।

নূর মোহাম্মদ/এএম/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।