যন্ত্রপাতি নেই, যাত্রীদের জিজ্ঞাসা করেই করোনাভাইরাস শনাক্ত

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি লালমনিরহাট
প্রকাশিত: ০৮:২৭ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০২০

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরে করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কতা জারি করা হলেও ভাইরাস শনাক্তের কোনো ধরনের যন্ত্রপাতি নেই। জিজ্ঞাসাবাদ করে যাত্রীদের অবাধে যাতায়াতের সুযোগ দিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বুড়িমারী স্থলবন্দরে দেখা গেছে, ভারত থেকে আসা যাত্রীদের থার্মাল স্ক্যানার ছাড়াই শুধুমাত্র জিজ্ঞাসা করেই চলছে করোনাভাইরাস শনাক্তের কার্যক্রম।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাংলাদেশের প্রবেশপথ বুড়িমারী স্থলবন্দরে ভারত থেকে আসা যাত্রীদের করোনাভাইরাস শনাক্তের থার্মাল স্ক্যানার (দেহের উত্তাপ মাপার যন্ত্র) নেই।

চীনা কর্তৃপক্ষের বরাতে বিবিসি ও গার্ডিয়ান শুক্রবারের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২১৩ জন। এছাড়া এতে আরও অন্তত ৯ হাজার ৬৯২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। চীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সংখ্যাটা অনেক কম দেখানো হচ্ছে। মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা ধামাচাপা দিয়ে মানুষকে ভুল তথ্য দিচ্ছে চীন।

Lalmonirhat

এ অবস্থায় চীনের প্রতিবেশী দেশগুলোতে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনাভাইরাস। চীনের প্রতিবেশী ভারত ছাড়াও নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে ত্রিদেশীয় বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে বাংলাদেশের। বাণিজ্যিক সম্পর্কের প্রাণকেন্দ্র লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর।

শুধু ব্যবসা-বাণিজ্যই নয়, স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন ব্যবহার করে প্রতিদিন অর্ধসহস্রাধিক পাসপোর্টযাত্রী এসব দেশে যাতায়াত করছেন। এর বেশির ভাগই চিকিৎসার জন্য যান। এসব দেশের শত শত ট্রাকচালক প্রতিদিন বাংলাদেশে আসছেন এবং দেশের চালকরা ভারতে যাচ্ছেন। সবমিলে বুড়িমারী ও চ্যাংরাবান্ধা স্থলবন্দর ত্রিদেশীয় প্রবেশপথ।

এমন গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথে যাত্রীদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে জ্বর, সর্দি-কাশি আছে কিনা জিজ্ঞাসা করে ছেড়ে দিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। অথচ করোনাভাইরাস শনাক্তে থার্মাল স্ক্যানারের বিকল্প নেই। এমন গুরুত্বপূর্ণ পথে থার্মাল স্ক্যানার না থাকায় দেশে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

Lalmonirhat

কুড়িগ্রামের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ১৫ দিন আগে চিকিৎসার জন্য ভারতে যাই। ভারতে থাকা অবস্থায় করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয়নি। শুক্রবার ফেরার পথে বুড়িমারী স্থলবন্দরে চিকিৎসকরা জানতে চেয়েছেন জ্বর, সর্দি-কাশি আছে কি-না। আমি না বলেছি। এরপর আমাকে ছেড়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

বুড়িমারী স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) খন্দকার মাহমুদ বলেন, স্থলবন্দরে চারজন চিকিৎসক থাকলেও করোনাভাইরাস শনাক্তের কোনো যন্ত্রপাতি নেই। ফলে ভারত ফেরত যাত্রীদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়।

বুড়িমারী স্থলবন্দর উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিকেল কর্মকর্তা আয়ুব আলী সরকার বলেন, করোনাভাইরাস শনাক্তের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আমাদের যন্ত্রপাতি দেয়া হয়নি। এজন্য যাত্রীদের জিজ্ঞাসা করেই করোনাভাইরাস শনাক্ত করছি আমরা।

লালমনিরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কাসেম আলী বলেন, বুড়িমারী ও ভারতের চ্যাংরাবান্ধা স্থলবন্দর চেকপোস্ট দিয়ে চীনা নাগরিক আসার সম্ভাবনা নেই। এজন্য থার্মাল স্ক্যানার নেই। প্রয়োজন হলে অবশ্যই থার্মাল স্ক্যানার বসানো হবে।

রবিউল হাসান/এএম/পিআর

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।