স্কুলশিক্ষিকা মৃত্যুর মামলায় ডিউকসহ তিন চিকিৎসক কারাগারে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশিত: ০৪:৪৭ পিএম, ০১ জানুয়ারি ২০২০

'ভুল চিকিৎসায়' স্কুল শিক্ষিকার মৃত্যুর অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আলোচিত-সমালোচিত চিকিৎসক ডিউক চৌধুরীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টায় ডিউকসহ তার মালিকানাধীন হাসপাতালের দুই চিকিৎসক ও মামলার আসামি অনুরেনশ্বর পাল অভি ও শাহাদাত হোসেন রাসেলের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ সফিউল আজম।

এর আগে হাইকোর্ট থেকে নেয়া চার সপ্তাহের জামিন শেষে গত ১৮ ডিসেম্বর জেলা ও দাযরা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন ডা. ডিউক, ডা. অভি ও ডা. রাসেল। তখন অবকাশকালীন বিচারক মো. হাসানুল ইসলাম মামলাটি অধিকতর শুনানির জন্য নতুন বছরের ১ জানুয়ারি ধার্য্য করেন।

বুধবার সকালে ওই তিন চিকিৎসক আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। দুই দফায় জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হয়। শুনানি শেষে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তিনজনকেই কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

Pic-duke-3

মামলায় বাদীপক্ষের একজন আইনজীবী তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত জানান, মামলার তিন আসামি হাইকোর্টের নির্দেশ মোতাবেক আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। পরে অবকাশকালীন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জামিন না দিয়ে মামলার অধিকতর শুনানির জন্য পরবর্তী দিন ধার্য্য করেন। বুধবার অধিকতর শুনানি শেষ বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী শাহ পরান বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। আমরা উচ্চ আদালতে যাব।

প্রসঙ্গত, 'ভুল চিকিৎসায়' জেলা শহরের মুন্সেফপাড়া এলাকার ক্রিসেন্ট কিন্ডার গার্টেনের সহকারী শিক্ষিকা নওশিন আহমেদ দিয়ার মৃত্যুর অভিযোগে তার বাবা শিহাব আহমেদ গেন্দু ওই তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গত ১৩ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, স্কুল শিক্ষিকা নওশিন আহমেদ দিয়া গত ৩০ অক্টোবর প্রসব বেদনা নিয়ে শহরের মুন্সেফপাড়ায় এলাকার ডা. ডিউক চৌধুরীর মালিকানাধীন খ্রিস্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে তার আগাম প্রসবের ব্যবস্থা করা হয়। দিয়া অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একটি কন্যা সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। কিন্তু পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার আগেই দিয়াকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়ায় হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী এলাকায় তার স্বামীর বাড়িতে নেয়া হয় তাকে। পরবর্তীতে ৪ নভেম্বর ভোরে দিয়ার প্রচণ্ড মাথা ব্যথা শুরু হলে তাকে আবারও খ্রিস্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালে নেয়া হয়। তখন ডিউক চৌধুরী, অরুনেশ্বর পাল অভি ও মো. শাহাদাত হোসেন রাসেল ‘ভুল ইনজেকশন এবং ওষুধ’ প্রয়োগ করার পর দিয়া অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এ সময় দিয়ার স্বজনরা মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে ডাকতে বললে ডিউক ও বাকি দুই চিকিৎসক চুপ থাকেন। এক পর্যায়ে দিয়ার মৃত্যু হলেও তার মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগিয়ে ওইদিন দুপুর একটার দিকে দ্রুত তাকে ঢাকা নিয়ে যেতে বলেন। এরপর অ্যাম্বুলেন্সে করে দিয়াকে নিয়ে বিকেল সাড়ে ৪টায় ঢাকার ল্যাব এইড হাসপাতালে পৌঁছানোর পর সেখানে চিকিৎসকরা কয়েক ঘণ্টা আগেই দিয়ার মৃত্যু হয়েছে বলে জানান।

আজিজুল সঞ্চয়/এমএএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।