বাবার সঙ্গে চায়ের দোকানে কাজ করেও জিপিএ-৫ পেল বিশাল
দিনের বেলা স্কুল শেষ করে বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বাবার সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে চায়ের দোকানে কাজ করে স্কুলছাত্র বিশাল মিয়া (১১)। চায়ের দোকানে কাজ শেষ করে গভীর রাতে বাড়িতে গিয়ে বসে বই-খাতা নিয়ে। পড়ালেখায় বেশ আগ্রহ তার। ছোট্ট বিশাল এবার তার আগ্রহ আর পরিশ্রমের ফল পেয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) প্রকাশিত প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে সে।
ফলাফল বিবরণী অনুযায়ী ছয়টি বিষয়ের সবকটিতেই এ প্লাস পেয়েছে বিশাল। এর মধ্যে বাংলায় ৮৫, ইংরেজিতে ৮৭, গণিতে ৮০, সমাজ বিজ্ঞানে ৯০, সাধারণ বিজ্ঞানে ৯১ ও ধর্মে ৯৬ নম্বর পেয়েছে সে।
বিশাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরশহরের মৌড়াইল এলাকার লিয়াকত আলী ও কুলসুম বেগম দম্পতির ছেলে। স্থানীয় সাহেরা গফুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১৯ সালের পিইসি পরীক্ষায় অংশ নেয় সে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের দুই নং প্ল্যাটফর্মের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে বিশালের বাবার চায়ের দোকান। বিশালের গ্রামের বাড়ির জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার আড়াইসিধা গ্রামে। বর্তমানে তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের মৌড়াইল এলাকায় থাকে। বিশালের বাবা বাসা ভাড়া ও তিন সন্তানের পড়াশুনার খরচসহ সাংসারিক খরচ মেটান তার চায়ের দোকান দিয়েই। প্রতিদিন বিকেল ৫টার পর এসে দোকানে কাজ করে বিশাল। এরপর গভীর রাতে বাড়ি ফিরে আবার পড়তে বসে।
বিশাল জানায়, দোকান থেকে বাড়ি ফিরে গিয়ে পড়াশুনা করত সে। মা কুলসুম বেগম তাকে স্কুল পাঠানো এবং পড়ালেখায় উৎসাহ যোগায়। পড়ালেখা করে আলোকিত মানুষ হওয়ার পাশাপাশি ভালো ক্রিকেটার হতে চায় সে।
সাহেরা গফুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিন খান বলেন, বিশাল খুবই মেধাবী ও পরিশ্রমী। দরিদ্রতা তাকে আটকে রাখতে পারেনি। তার এ ফলাফলে আমরা ভীষণ আনন্দিত।
আজিজুল সঞ্চয়/আরএআর/জেআইএম