মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার থেকে যুদ্ধাপরাধী, পরোয়ানা জারি

সাইফুল ইসলাম মিরাজ
সাইফুল ইসলাম মিরাজ সাইফুল ইসলাম মিরাজ বরগুনা
প্রকাশিত: ১০:১১ পিএম, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে বরগুনার ছয়জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এদের মধ্যে আব্দুল মান্নান হাওলাদার নামে একজন অভিযুক্তের নাম প্রকাশ করলেও বাকি পাঁচ অভিযুক্তের নাম গ্রেফতারের স্বার্থে প্রকাশ করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এদিকে গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত আব্দুল মান্নান বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংদের কমান্ডার হিসেবে তিনবার দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে একবার পাথরঘাটা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিন ভোটে জয়লাভ করে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

এছাড়া প্রভাব বিস্তার করে নির্বাচন ছাড়াই দুবার পাথরঘাটা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন আব্দুল মান্নান।

এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মো. আব্দুল খালেক জাগো নিউজকে বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত আব্দুল মান্নান তিনবার পাথরঘাটা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

আব্দুল খালেক আরও বলেন, একাত্তরের উত্তাল দিনগুলোতে হানাদার বাহিনীর দোসর হিসেবে কাজ করেছেন আব্দুল মান্নান। পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানি এলাকার মুক্তিকামী মানুষ মো. মতিয়ার রহমানকে পাক সেনাদের হাতে তুলে দেন তিনি। এরপর পাক সেনারা মতিয়ার রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এছাড়া মতিয়ার রহমানের স্ত্রীকেও পাক সেনাদের হাতে তুলে দেন আব্দুল মান্নান। এরপর পাক সেনারা তাকে পাশবিক কায়দায় নির্যাতন করে।

পাক সেনাদের দোসর আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগে ২০১৭ সালের ২১ মে পাথরঘাটার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেন শহীদ মতিয়ার রহমানের ছেলে আবু মিয়া (৪৫)। পরে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠান। একই মামলায় অভিযুক্ত করা হয় আব্দুল মান্নানের বড় ভাই আবদুল রাজ্জাক ও ভগ্নিপতি আরোজ আলীকে।

এ বিষয়ে আবু মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার বাবা মতিয়ার রহমানকে পাক সেনাদের হাতে তুলে দিয়ে হত্যা করতে সহযোগিতা করেছেন আসামিরা। হত্যার পর মতিয়ার রহমানের মরদেহ এমনভাবে গোপন করে, যা পরবর্তীতে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মারুফ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, পাক সেনাদের দোসর আব্দুল মান্নান হাওলাদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার কাগজপত্র এখনো পাইনি আমরা। কাগজপত্র হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মিরাজ/এএম/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।