কুমিল্লায় চিকিৎসকের অবহেলায় শিশু মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি
কুমিল্লা মহানগরীর লাকসাম রোডস্থ কুমিল্লা মেডিকেল সেন্টারর নামের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে এক শিশু ডেলিভারির পর মৃত ঘোষণা করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দাফনের আগে কান্নাকাটি করে নড়েচড়ে ওঠে। পরে ৫০ কিলোমিটার দূরে দাফনের জন্য নেয়া ও আবার ওই হাসপাতালে আনার পথে ছয় ঘণ্টা ধরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে মারা যায় নবজাতক শিশুটি।
এ ঘটনার তদন্তে জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে বুধবার তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি বুধবার থেকেই তদন্ত কাজ শুরু করেছে। ওই নবজাতক জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের কেচকিমুড়া গ্রামের বাসিন্দা ও মসজিদের ইমাম মাহবুবুর রহমানের ছেলে।
জানা যায়, চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কেচকিমুড়া গ্রামের মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী রুবিনা আক্তারের প্রসব ব্যথা উঠলে তাকে গত ২১ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. মলিনা রাণী কুন্ডুর অধীনে ভর্তি করা হয়। গত সোমবার বেলা ১২টার দিকে সে স্বাভাবিকভাবে একটি পুত্র সন্তান প্রসব করে।
ডেলিভারির পর কর্মরত ডিউটিরত ডা. ফারজানা আক্তার ডেইজিসহ সংশ্লিষ্ট ব্রাদার শিশুটির দেহ কালো বর্ণ ধারণ করেছে ও শিশুটি মারা গেছে বলে জানায় এবং হাসপাতালের ময়লা ফেলার বালতিতে শিশুর মরদেহ ফেলে দেয়ার কথা বলে। এতে শিশুর বাবা অনীহা প্রকাশ করলে তারা তাৎক্ষণিকভাবে পেকিং করে একটি বিস্কুটের কার্টনে ভর্তি করে তার মায়ের সিটের নিচে প্রায় এক ঘণ্টা রেখে দেয় এবং প্যাকিং বাবদ ২শ টাকা নেয়া হয়।
পরে শিশুটিকে দাফনের জন্য হাসপাতাল থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরবর্তী কেচকিমুড়া গ্রামে নেয়ার পর দাফনের প্রস্তুতির সময় শিশুটি কান্নাকাটিসহ নড়াচড়া ও চোখ এদিক-ওদিক করতে থাকে। এ খবর পেয়ে জানাজায় আগত লোকজন ছাড়াও এলাকাবাসী জড়ো হয়। পরে ওই শিশুকে তাৎক্ষণিকভাবে ওই হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে সন্ধ্যা ৬টার দিকে শিশুটি মারা যায়।
এ বিষয়ে জাগোনিউজ২৪.কমসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে রিপোর্ট প্রকাশের পর তোলপাড় শুরু হয়। এদিকে এ ঘটনার তদন্তে জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. গোলাম শাহজাহানকে প্রধান করে এবং মেডিকেল অফিসার ডা. শাহাদাৎ হোসেন ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামকে সদস্য করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
সিভিল সার্জন ডা. মুজিবুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, কমিটি বুধবার থেকে তদন্ত কাজ শুরু করেছে, তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে ওই কমিটিকে বলা হয়েছে।
## দাফনের আগে কেঁদে উঠলো শিশুটি
কামাল উদ্দিন/বিএ