সিরাজগঞ্জে দু’গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত ২৫


প্রকাশিত: ১১:৫৮ এএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে জুগনিদহ ও পারকোলা গ্রামবাসীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষে পুলিশ ও সাংবাদিকসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দিনভর থেমে থেমে চলা এই সংঘর্ষের সময় বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়ক দিয়ে ৩ ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।

সংঘর্ষ চলাকালে বাড়ি ভাংচুর ও খরের গাঁদায় আগুন দেয়ার ঘটনাও ঘটে। পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে বিকেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে, আহতদের শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতা ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উভয় গ্রামের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। কুরবানির ঈদের আগের দিন পারকোলা গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে আলমাস আলী জুগনিদহ গ্রামের রয়েজ ফকিরের ছেলে মজনু মিয়াকে মারপিট করে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেলে পারকোলা বাজারে শালিস বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। সালিশ বৈঠকের বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে পারকোলা বাজারে উপস্থিত দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে।

এ সময় উভয় গ্রামের শত শত লোকজন রামদা, চাইনিজ কুড়াল, হলঙ্গা, লাঠি, ফালা, ইটপাটকেল ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহাসড়কের উপর একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শাহজাদপুর থানা পুলিশ শর্টগান, রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপসহ ও ব্যাপক লাঠিচার্জ করেন।

এ ঘটনায় আনসার আলী (৩৫), শফিকুল ইসলাম (৪০), নজরুল (২০), জলিলসহ (২৪)  উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়।

সংঘর্ষের সময় গ্রামবাসীদের ছোঁড়া ইটপাটকেলের আঘাতে শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম, কনস্টেবল শরিফ হোসেনসহ চার পুলিশ আহত হয়। এছাড়া জুংলিদহ গ্রামাবাসীদের হামলায় যুগান্তর পত্রিকার শাহজাদপুর প্রতিনিধি মুমিদুজ্জামান গুরুতর আহত হয়। এ সময় তার সেলফোনটিও ছিনিয়ে নেয়া হয়।

প্রায় ৩ ঘণ্টা পর সিরাজগঞ্জ থেকে দাঙ্গা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে টিয়ারশেল, রাবার বুলেট নিক্ষেপ করলে সবাই মহাসড়ক থেকে সরে যায়। এরপর থেকে সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। প্রায় তিন ঘণ্টা রাস্তা অবরোধের কারণে মহাসড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানযটের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষের সময় একটি খড়ের গাদায় আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। পরে এলাকাাবাসী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

শাহজাদপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। মহাসড়কে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম আহমেদ জাগো নিউজকে জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও মোটর শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে নিয়ে উভয় গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করে মহাসড়ক থেকে তাদের সরানো হয়। তাদের শান্ত থাকার জন্য নির্দেশনা দিয়ে আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বাদল ভৌমিক/এসএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।