নতুন ধান আসার আগেই ২০১৬ সালের চাল দিয়ে গুদামভর্তি
নতুন ধান আসার আগেই ২০১৬-১৭ সালের চাল দিয়ে গুদামভর্তি করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছেন কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনোয়ারুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ভোরে ৭৪ বস্তা পুরাতন চালসহ একটি ট্রলি আটক করা হয়েছে। আটককৃত চালের বস্তার গায়ে খাদ্য অধিদপ্তরের ২০১৬-১৭ ও ১৮ সালের সিল ছিল।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের সন্দেহ হলে জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে জানিয়ে দেন। ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে চালসহ ওই ট্রলি জব্দ করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এই ফাঁকে গুদাম কর্মকর্তাসহ চালের মালিক পালিয়ে যান।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার ভোরে উলিপুর খাদ্যগুদামে তিনটি ট্রলিভর্তি চাল নিয়ে আসা হয়। এ সময় ভারপ্রাপ্ত খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা মনোয়ারুল ইসলামের উপস্থিতিতে তাড়াহুড়ো করে চাল খালাস করেন শ্রমিকরা। বিষয়টি দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। তখন ৯৯৯ নম্বরে কল করলে উলিপুর থানা পুলিশের এসআই মশিউর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তারা আসার আগেই দুটি ট্রলি, চালের মালিক ও ভারপ্রাপ্ত গুদাম কর্মকর্তা পালিয়ে যান।
পরে বস্তা খুলে দেখা যায়, বস্তাভর্তি এসব চাল নিম্নমানের এবং অনেক পুরাতন। বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হলেও উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিকেলে বিষয়টি প্রকাশ হয়ে যায়।
উলিপুর থানা পুলিশের এসআই মশিউর রহমান বলেন, অফিস শুরু হওয়ার আগেই সরকারি গুদামে কেন নিম্নমানের পুরাতন চাল তোলা হচ্ছে তা শ্রমিকদের কাছে জানতে চাইলে সদুত্তর দিতে পারেননি। এ সময় সেখান থেকে ৩০ কেজি ওজনের ৭৪ বস্তা চালসহ একটি ট্রলি আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) আমার দায়িত্ব হস্তান্তরের কথা। সে কারণে গুদামের মজুত ঠিক করছিলাম।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হেমন্ত বর্মনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
উলিপুর থানা পুলিশের ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ৯৯৯ থেকে ফোন আসায় সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। গুদামের ভেতরে থেকে মালিকবিহীন ট্রলিবোঝাই চাল জব্দ করে থানায় আনা হয়। চালের প্রকৃত মালিকের খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল কাদের বলেন, খবর পেয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি তদন্ত করে খাদ্য নিয়ন্ত্রককে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
নাজমুল/এএম/জেআইএম