পিইসি পরীক্ষায় নকলে মজেছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কামালেরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় পিইসি পরীক্ষা কেন্দ্রে নকলেই যেন একমাত্র ভরসা। নকল চলাকালীন পরীক্ষা পরিদর্শকরা থাকেন নীবর ভূমিকায়। কেন্দ্র সচিবও যেন নির্বাক। কেন্দ্রের ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী শিক্ষা আফিসার যেন মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে থাকেন।
অভিভাবক ও শিক্ষকরা ভালো রেজাল্টের আশায় পরীক্ষা কেন্দ্রে নিজেরাই নকল সরবরাহ করছেন বলে সচেতন মহলের দাবি। কোমলমতি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষার পরিবেশ ভালো করতে উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দিলেন।
রোববার (২৪ নভেম্বর) সারাদেশের মতো গাইবান্ধাতেও গণিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সরেজমিনে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কামালেরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় পিইসি পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে এ যেন মাছের বাজার। পরীক্ষার্থীদের নকল সরবরাহ করতে শতশত অভিভাবক কেন্দ্রের আশপাশে ঘুরাফেরা করছেন। একটু সময় পেলেই তারা নকলের চিরকুট হাতে ধরে দিচ্ছেন। কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক শিক্ষকরা যেন নির্বাক। কেউ কোনো প্রতিবাদ তো দূরের কথা পারলে নকল করার সহায়তা করছেন।
অধিকাংশ পরিক্ষার্থী প্রকাশ্যে নকল করলেও কেন্দ্র ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মামুন অর রশিদ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। পরীক্ষার কোনো পারিবেশ নেই এ কেন্দ্রে এমন অভিযোগ করেছেন সচেতন অভিভাবকরা।
মিজানুর রহমান নামের এক অভিভাবক জানান, পরীক্ষা কেন্দ্রে যে যার মতো পারছে নকল করছে। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে। আগামীতে লেখাপড়ার মান আরও কমে গিয়ে নকলের প্রবণতা বেড়ে যাবে। এতে ভালো শিক্ষার্থী আর মন্দ শিক্ষার্থীর কোনো পার্থক্য থাকবে না।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক স্কুলশিক্ষক জানান, নকলের প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার কারণ হচ্ছে সরকারকে ভালো রেজাল্ট উপহার দিয়ে শিক্ষার মান বৃদ্ধি দেখাতেই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা এ নকলের সঙ্গে জড়িত। তাদের কারণে আজ পরীক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এতে ভালো শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া থেকে মুখ ফিরে নেবে।
পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক আতিয়ার রহমান জানান, নকল প্রতিরোধে আমরা চেষ্টা করছি। কিন্তু অভিভাবকরাই জোর করে নকল দিচ্ছে।
কামালের পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কামালের পাড়া উচ্চ বিদ্যালয় পিইসি পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব শাহিনুর ইসলাম সাজু জানান, নকল প্রতিরোধে আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি ।
কেন্দ্র ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মামুন অর রশিদ জানান, চেষ্টা করেও পরিবেশ শান্ত করা যাচ্ছে না। আমরা নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে চেষ্টা করছি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আজিজুল ইসলাম জানান, পরীক্ষার পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্র সচিবকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কোনো অনিয়ম হলে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
জাহিদ খন্দকার/এমএএস/এমএস