বাঁশের সঙ্গে হাত-পা বেঁধে ঝুলিয়ে যুবককে নির্যাতন
সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলায় বিচারের নামে এক যুবককে বাঁশের সঙ্গে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ২৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটিতে দেখা যায়- টুপি মাথায় ৫০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি ৩৪/৩৫ বছর বয়সী এক যুবককে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছেন। বাড়ির উঠানে গোল হয়ে এ দৃশ্য দেখছেন বেশ কয়েকজন। নির্যাতনের শিকার ওই যুবক চিৎকার করে কাঁদছেন আর বলছেন ভাই ছেড়ে দেন আর মাইরেন না আমি মরে যাব। কিন্তু নির্যাতনকারী থামছেন না।
নির্যাতনের এই ভিডিওটি গত মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) sbdtv নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করা হয়। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, এই হচ্ছে জকিগঞ্জের বহুল আলোচিত, নারী কেলেঙ্কারী, মাদকসহ বহু অপকর্মের গডফাদার। সে নাকি চ্যালেঞ্জ করে জকিঞ্জের থানা পুলিশ তাকে কোনোদিন গ্রেফতার করবে না। সত্যিই তার নিচে ইয়াবা পাওয়ার পরও গ্রেফতার করেনি জকিগঞ্জ থানার সাবেক এক ওসি। এই হল আব্দুস সালাম (ফকির মস্তান), মধ্যযুগীয় কায়দায় মানুষের ওপর পৈশাচিক নির্যাতনের চিত্র!
বুধবার রাতে এই ভিডিওটিতে মন্তব্য করেছেন সিলেট জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন। ‘sp sylhet’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে তিনি লেখেন, ‘বিষয়টি আজই আমাদের নজরে এসেছে। আমরা শিগগিরই তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসব।’
মো. শাহরিয়ার ইমন জসিম নামে একজন মন্তব্য লিখেছেন, জকিগঞ্জ উপজেলায় এমন জানোয়ারের আমদানি কখন হলো। আর যারা খুব কাছ থেকে দেখছে এরা কি মানুষ নাকি অন্য কিছু। প্রশাসনের কাছে কি এই জানোয়ারের ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি?
অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুক এ ঘটনার তীব্র সমালোচনা করে দায়ী ব্যক্তির শাস্তি দাবি করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার ৩ নম্বর কাজলশাহ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম আটগ্রাম গুচ্ছগ্রামের আফজাল নামের এক যুবককে বাঁশের সঙ্গে হাত-পা বেঁধে ঝুলিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করেছেন। নির্যাতনের ভিডিওটি ইতোমধ্যে পুলিশের হাতেও পৌঁছেছে।
সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন জানান, ঘটনাটি কয়েক মাস আগের। ইতোমধ্যেই নির্যাতিত ব্যক্তি আফজালকে খবর দেয়া হয়েছে। তার কাছ থেকে অভিযোগ নিয়েই নির্যাতনকারী আব্দুস সালামকে গ্রেফতারে অভিযানে নামবে পুলিশ।
তিনি আরও জানান, আব্দুল সালামের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। গত ১২ নভেম্বর আরও একটি অভিযোগ এসেছে। যাতে বলা হয়েছে আব্দুস সালামের বিচারের নামে অপমান নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে স্থানীয় আব্দুল মান্নান নামে একজন বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
পুলিশ সুপার বলেন, এই অভিযোগও তদন্ত করছে পুলিশ। এর মধ্যেই এই ভিডিওটি পাওয়া গেছে । তাকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বাঁশের সঙ্গে হাত-পা বেঁধে ঝুলিয়ে যুবককে পেটালেন ইউপি সদস্য
ছামির মাহমুদ/আরএআর/জেআইএম