হার না মানা লিতুন জিরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি যশোর
প্রকাশিত: ০৮:৪৬ এএম, ১৮ নভেম্বর ২০১৯

দুই হাত-পা ছাড়াই জন্ম নেয়া লিতুন জিরা মুখে ভর দিয়ে লিখেই এবার প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা দিচ্ছে। লিতুন জিরা যশোরের মণিরামপুর উপজেলার শেখপাড়া খানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে। সে উপজেলার খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিইসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।

লিতুন জিরা পরনির্ভর হয়ে সমাজের বোঝা হতে চায় না। লেখাপড়া শিখে মানুষের মত মানুষ হয়ে আরও দশজন মানুষের মতো আত্মনির্ভশীল হতে চায় দুই হাত-পা ছাড়া জন্ম নেয়া লিতুন জিরা। মুখে ভর দিয়ে লিখেই মেধার স্বাক্ষর রাখছে এই শিক্ষার্থী। কয়েকদিন আগে প্রিয় দাদু ভাই মারা যাওয়ায় মনে কষ্ট নিয়েই পরীক্ষায় বসেছে লিতুন জিরা।

Litun-zira

স্থানীয়রা জানান, লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহী লিতুন জিরা প্রখর মেধাবী। হুইল চেয়ারে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতো। বর্তমানে হুইল চেয়ারটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তা চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে গেছে। তার বাবা উপজেলার এ আর মহিলা কলেজের প্রভাষক। তিনি গত ১৭ বছর ধরে ওই কলেজে চাকরি করলেও আজও কলেজটি এমপিওভুক্তি হয়নি। তার বাবাই সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। বেতন না হওয়ায় নতুন হুইল চেয়ার কেনার জন্য বাবাকে বলতে পারছে না লিতুন জিরা। বছর সাতেক আগে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হুইল চেয়ারটি দেয়া হয়। বর্তমানে তার একটি হুইল চেয়ার খুব দরকার।

লিতুন জিরার বাবা হাবিবুর রহমান ও মা জাহানারা বেগম বলেন, জন্মের পর মেয়ের ভবিষ্যত নিয়ে তারা নানা চিন্তা করতেন। এখন মেয়ের মেধা তাদের আশার সঞ্চার করেছে। লিতুন জিরা আর দশজন শিশুর মতো খাওয়া-দাওয়া, গোসল সব কিছুই করতে পারে। মুখ দিয়েই লিখে সে। তার চমৎকার হাতের লেখা যে কারও দৃষ্টি কাড়বে।

Litun-zira

এ সময় কথা হয় লিতুন জিরার সঙ্গে। সে পরনির্ভর না হয়ে লেখাপড়া শিখে নিজেই কিছু করতে চায়।

খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজেদা খাতুন বলেন, শিক্ষকতা জীবনে লিতুন জিরার মতো মেধাবী শিক্ষার্থীর দেখা পাইনি। এক কথায় সে অসম্ভব মেধাবী। শুধু লেখাপড়ায় না, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও অন্যদের থেকে অনেক ভালো। মডেল টেস্টেও কেন্দ্রে প্রথম হয়েছে সে।

মিলন রহমান/আরএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।