দিনাজপুরে এবার চামড়া আমদানি কম


প্রকাশিত: ১২:০৩ পিএম, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫

গত বছরের তুলনায় দাম কম। দাম বেধে না দেওয়া ও ব্যাংক থেকে জেলা পর্যায়ে লোন না দেওয়ায় এবং চামড়ার আমদানি কম হওয়ায় দিনাজপুরে বিপাকে পড়েছেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। অপরদিকে চামড়া কিনে সবচেয়ে লোকসানের মুখে পড়েছে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।

রংপুর বিভাগের সবচেয়ে বড় চামড়ার মার্কেট দিনাজপুরের রামনগরে। এই মার্কেটে শতাধিক আড়ৎদার চামড়া কিনে নিয়ে ঢাকায় পাঠিয়ে থাকেন। এই মার্কেটে শুধুমাত্র কোরবানিতে নয়, প্রতিদিনই চামড়ার কেনা-বেচা চলে।

চামড়া মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, এই মার্কেটে গত কয়েকদিনে ৮শ থেকে ১৮শ টাকা পর্যন্ত চামড়ার বেচা-কেনা হয়েছে। তবে গত বছরের চেয়ে এবার চামড়ার আমদানি  কম হয়েছে। আবার বাজারে নেই দাম। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। যারা কিছুটা লাভের আশায় গ্রাম-গঞ্জ থেকে বেশি মূল্যে চামড়া কিনেছেন। কিন্তু বাজারের চিত্র ভিন্ন হওয়ায় তাদেরকে লোকসানে পড়তে হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে আড়ৎদার মালিকদের কোনো হাত নেই বলে জানিয়েছে চামড়া ব্যবসায়ীরা। কারণ তারা নিজেরাই রয়েছেন আশঙ্কার মধ্যে।

মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, এবার তারা গ্রাম থেকে যে চামড়া ১১শ থেকে ১২শ টাকায় কিনেছেন এই চামড়া বাজারে তাদেরকে ৮শ থেকে ৯শ টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে। এতে করে প্রতি চামড়ায় তাদেরকে ২শ থেকে ৩শ টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। বিভিন্ন উপজেলার গ্রাম থেকে চামড়া কিনে কমমূল্যে বিক্রি করায় তাদের মাথায় হাত পড়েছে। এছাড়া উপকরণের (লবন) দাম বেশি হওয়ায় তারা চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ করতেও ভয় পাচ্ছেন। আর প্রক্রিয়াজাতকরণ ছাড়া চামড়া রাখা সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে তারা চামড়া বিক্রি করছেন।

Dinajpur-Leather

খোদ মাধবপুর মিস্ত্রিপাড়ার মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, গতবারের তুলনায় এবারে চামড়ার দাম প্রায় অর্ধেক। ব্যাপারটি বুঝতে না পারায় তাদেরকে লোকসান গুনতে হচ্ছে। পূর্বে যে চামড়া প্রতি বর্গফুট ১০০-১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে ঈদে তা বিক্রি হয়েছে ৭০-৭৫ টাকায়। এছাড়াও একটু নিন্মমানের চামড়ার দাম ছিল ৬৫-৭০ বর্তমানে তা ৪০/৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

দিনাজপুর চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি তৈয়ব উদ্দিন চৌধুরী জানান, ঢাকা থেকে ট্যানারি মালিকরা দাম বেধে না দেয়ায় অনুমান ভিত্তিক চামড়া কিনছে তারা। তাছাড়া জেলা পর্যায় ব্যাংক ঋণ না পাওয়ায় আর্থিক অনটনের জন্যও তারা চামড়া কিনতে পারছেন না।

তিনি আরো জানান, ট্যানারি মালিকরা গত বছরের চামড়া রফতানি করতে না পারায় জেলা পর্যাযের মালিকদের টাকা পরিশোধ করতে পারেনি তারা ।

চামড়ার আমদানি কম কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই সময়টি মানুষের অভাবের সময়। তাই কিছু কোরবানি কম হয়েছে। এ ছাড়াও চামড়ার বাজার বুঝে উঠতে না পারার কারণে গ্রাম ও উপজেলা পর্যাযের বড় ব্যবসায়ীরা চামড়া আড়তে বিক্রি না করে বেশি দামের আশায় নিজেরাই চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে রেখেছেন।

সীমান্তবর্তী এই জেলার চামড়া ভারতে পাচার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, আগামী ৭/১০ দিন না গেলে চামড়ার বাজার সম্পর্কে বা ভারতে পাচারের বিষয়টি নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাবেনা।

এমদাদুল হক মিলন/ এমএএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।