সিলেটে নেতাকর্মীদের তোপের মুখে আ.লীগের সম্মেলন পণ্ড
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তৃণমূল নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েছেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য স্থানীয় সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ। দীর্ঘ ১৪ বছর পর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হলেও তৃণমূলের দাবি উপেক্ষিত হওয়ায় সেখানে তীব্র হট্টগোল হয়েছে। বুধবার (১৩ নভেম্বর) পূর্বনির্ধারিত সম্মেলনের একপর্যায়ে রাত পৌনে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
পরে নুরুল ইসলাম নাহিদসহ কেন্দ্রীয় নেতারা পুলিশি পাহাড়ায় ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এর ফলে নুরুল ইসলাম নাহিদের গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন ব্যর্থ হয়ে যায়।
জানা গেছে, সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে নুরুল ইসলাম নাহিদ পূর্বের কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট ইকবাল আহমদকে সভাপতি রেখে নিজের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে পরিচিত সৈয়দ মিসবাহকে সাধারণ সম্পাদক করে সমঝোতার ভিত্তিতে কমিটি গঠনের চেষ্টা করলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা তা মেনে নেননি। এ সময় শুরু হয় হট্টগোল। তখন নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েন নুরুল ইসলাম নাহিদ। পরে কোনো কমিটি ঘোষণা না করেই পুলিশি নিরাপত্তায় ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন তিনি।
এ ঘটনায় তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পুরো গোলাপগঞ্জ বাজারজুড়ে। নেতাকর্মীরা কাউন্সিলস্থল থেকে বেরিয়ে এসে গোলাপগঞ্জ চৌমোহনায় সড়ক অবরোধ করে স্লোগান দিতে থাকেন।
গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, কমিটি গঠন নিয়ে সামান্য সমস্যা হয়েছিল। তাই এমপি মহোদয় রাগ করে চলে গেছেন। তবে আপাতত পরিবেশ শান্ত আছে।
সড়ক অবরোধের ব্যাপারে তিনি বলেন, সড়কের পাশে কয়েকটা পোলাপান দাঁড়িয়ে আছে।
কাউন্সিল ঘিরে বিশৃঙ্খলার কথা স্বীকার করে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক বলেন, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ একটি কমিটি গঠন করে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু কমিটি ঘোষণা করতে পারেননি। এর আগেই সমস্যা তৈরি হয়ে যায়। তাই তারা সেখান থেকে কমিটি ঘোষণা না করেই চলে গেছেন।
এর আগে বুধবার দুপুর ১২টায় গোলাপগঞ্জ পৌরসভা প্রাঙ্গণে সম্মেলন অনুষ্ঠান শুরু হয়। গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রফিক আহমদের পরিচালনায় সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, প্রধান আলোচক ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে দেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ইনাম আহমদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিছবাহ উদ্দিন সিরাজ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। অনুষ্ঠানের শুরুতে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান।
বক্তব্য বক্তব্য দেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য এমপি সৈয়দা জেবুন্নেছা হক, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েছ, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, কানাডা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সরওয়ার হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক, সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন, নাছির উদ্দিন খান, বিজিত চৌধুরী, জগলু চৌধুরী, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট সালেহ আহমদ সেলিম প্রমুখ।
ছামির মাহমুদ/আরএআর/জেআইএম