পুলিশের সোর্স সেজে আ.লীগ নেতার কাণ্ড

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নড়াইল
প্রকাশিত: ০৭:২৭ পিএম, ০৮ নভেম্বর ২০১৯

পুলিশের সোর্স সেজে বাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মাদকের পোটলা রেখে মোটা অংকের টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে এনামুল শেখ নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। নড়াইল সদর উপজেলার কলোড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তিনি। বাড়ি আগদিয়া গ্রামে। বাবার নাম মৃত ফজর শেখ।

এলাকাবাসীরা অভিযোগ করেছেন, এনামুল শেখ কয়েক বছর ধরেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে, আবার কখনো সাধারণ মানুষের বাড়িতে মাদকের পোটলা রেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ওই ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে গেলে তাকে ছাড়িয়ে আনার নামে মোটা অংকের টাকা আদায় করেন।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) আগদিয়া বাজারে এ ব্যাপারে এক সমাবেশের আয়োজন করে বাজার বণিক সমিতি।

কলোড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো.আব্বাস সরদারের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা বিবেকানন্দ বিশ্বাস, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত সাহা, বিছালী পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক মো. কওাছার আলী, মাওলানা আব্দুল কাদের, আগদিয়া বাজার বণিক সমিতির সভাপতি লিটন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক সোহেল সিকদার প্রমুখ।

বাজারের সাইকেল মিস্ত্রি জাহাঙ্গীর সরদার (২৮) বলেন, গত বুধবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এনামুল শেখ সামনে দাঁড়িয়ে খোশ গল্প করার সময় কখন, কীভাবে তার গ্যারেজের মালামাল রাখার বাক্সের নিচে একটি ছোট কৌটায় গাঁজার পুড়িয়া রেখে দেয় তা টের পাননি। পরের দিন (বৃহস্পতিবার) সকালে বিছালী ফাঁড়ি থেকে একজন পুলিশ এসে আমার কাছে মাদক রাখার কথা জানতে চায়। আমি জানি না বলায় তিনি বাক্সের নিচে থেকে একটি কৌটা বের করে তার মধ্যে গাঁজা পান এবং আমাকে ফাঁড়িতে নিয়ে যান। পরে সদর থানায় চালান দেন। ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকাবাসী থানায় গিয়ে আমাকে ছাড়িয়ে আনেন।

narail-.jpg

বাজারের আরেক ব্যবসায়ী আমিনুর রহমান অভিযোগ করেন, এনামুলের শাগরেদ শিমুলিয়া গ্রামের টনি মোল্লা কিছুদিন আগে তার দোকানের শো-কেসের নিচে তিন পিস ইয়াবা রেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে সেখান থেকে ইয়াবা বের করে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়। তিনি বলেন, এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল এমন অপকর্মগুলো করেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে মো. এনামুল শেখ এবং টনি মোল্লাকে এলাকায় পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

জানতে চাইলে কলোড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্ত রহমান বলেন, মো. এনামুল শেখ সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি এমন ন্যাক্কারজনক কাজে জড়িত থাকলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।

এ বিষয়ে শুক্রবারের সমাবেশে পুলিশ সুপার বলেন, যত বড় নেতাই হোন না কেন, পুলিশের সোর্স সেজে এমন ন্যাক্কারজনক কাজ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনো পুলিশ সদস্যও এমন ঘটনায় জড়িত থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি বলেন, নড়াইলকে মাদক, ইভটিজিং, বাল্যবিয়ে ও সন্ত্রাসমুক্ত মডেল জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে এমপিসহ জেলা প্রশাসন অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য জনসাধারণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান নড়াইল জেলা পুলিশের এই শীর্ষ কর্মকর্তা।

হাফিজুল নিলু/এমএমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।