পরীক্ষা কেন্দ্রে অসুস্থ ছাত্রীকে চিকিৎসা দিলেন না ডাক্তার!
দিনাজপুরের বিরামপুর পৌর শহরের চাঁদপুর মাদরাসায় চলমান জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা কেন্দ্রে ফাহিমা খাতুন নামে এক ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে কেন্দ্রের নিয়োগকৃত (অন-কল) ডাক্তার মশিউর রহমান কল করলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, আপনারা অনারিয়াম দেন না, তাই আপনার কেন্দ্রে যাওয়া যাবে না বলে জানান। এ ঘটনায় শিক্ষক ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল ৭ নভেম্বর সকালে এ ঘটনা ঘটেছে।
চাঁদপুর মাদরাসার কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ আ.ছ.ম. হুমায়ুন কবীর জাগো নিউজকে জানান, সকাল ১০টা থেকে জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ে পরীক্ষা চলছিল। বেলা ১১টার দিকে কানিকাটাল দারুল উলুম দাখিল মাদরাসার ছাত্রী ফাহিমা খাতুন মাথা ঘুরে পড়ে যায়। এসময় পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়োগকৃত (অন-কল) হাসপাতালের ডাক্তার মশিউর রহমানকে কল দেয়া হয়। তখন ডা. মশিউর রহমান পরীক্ষা কেন্দ্রে আসতে অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, আপনি অনারিয়াম দেন না, তাই আপনার কেন্দ্রে যাওয়া যাবে না। অসুস্থ ছাত্রীকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
পরীক্ষা চলাকালীন ছাত্রীকে হাসপাতালে নেয়ার খবর শুনে কেন্দ্র সচিব ও উপস্থিত শিক্ষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। তারা তড়িঘড়ি করে মাদরাসার পাশের এক স্থানীয় চিকিৎসককে ডেকে এনে ছাত্রীর চিকিৎসা করালে কিছুক্ষণ পর ওই ছাত্রী সুস্থ হয়ে পুনরায় পরীক্ষা দিতে বসে।
তিনি আরও জানান, অসুস্থ ছাত্রী সুস্থ হবার অনেক পরে পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত হাসপাতালের সেই চিকিৎসক ডা. মশিউর রহমান কেন্দ্রে না গিয়ে হাসপাতালের হারবাল অ্যাসিসটেন্ট আতাউর রহমানকে চিকিৎসা দিতে পাঠান।
জানতে চাইলে ডা. মশিউর রহমান বলেন, বিগত পরীক্ষাগুলোতে দায়িত্বে থাকার পরও কেন্দ্র সচিব আমাকে কোন সম্মানি দেন নাই। একারণে পরীক্ষা কেন্দ্রে না গিয়ে হাসপাতালের হারবাল অ্যাসিস্টেন্ট আতাউর রহমানকে চিকিৎসা দিতে পাঠানো হয়েছে।
ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা নূর হোসেন মিয়া জানান, ডাক্তারের এ আচরণে হতাশ হয়েছি। আমার মতে ডাক্তার কাজটি ঠিক করেন নাই।
বিরামপুর হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সিরাজুল ইসলাম জানান, সম্মানি না পাওয়ার কারণে অসুস্থ ছাত্রীকে চিকিৎসা দিতে না যাওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। আমি এখনও কোনো অভিযোগ পাইনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদুর রহমান জানান, পরীক্ষা কেন্দ্রে ছাত্রীকে চিকিৎসা দিতে না যাওয়ার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমদাদুল হক মিলন/এমএএস/এমএস