স্কুলছাত্র ভাতিজার হাতে চাচি খুন, চাচার অবস্থা আশঙ্কাজনক
গাজীপুরে চাচি রিনা আক্তারকে (৪৫) হত্যার পর চাচা সিদ্দিক বেপারীকে কুপিয়ে জখম করেছে ভাতিজা ও তার বন্ধুরা। রোববার সকালে গাজীপুর মহানগরীর সদর থানাধীন বিলাশপুর নিয়ামত সড়ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জিএমপি সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক শেখ মো. মিজানুর রহমান জানান, রিনা-সিদ্দিক দম্পতি দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুর মহানগরের নিয়ামত সড়ক এলাকায় নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের তৃতীয় তলার ফ্লাটে বসবাস করছেন। শনিবার রাতে তারা দু’জনেই রাতের খাবার সেরে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে উঠে স্বামী সিদ্দিক ঘরে টাইলস লাগানো দেয়ালে পানি দিতে যান। এ সময় ভাতিজা ঘরে ঢুকে রিনাকে গলায় ওড়না পেচিয়ে ও নাকে-মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। তারা পালিয়ে যাওয়ার সময় দেখে ফেলায় তারা সিদ্দিকে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে যায়। তবে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা এখনও জানা সম্ভব হয়নি।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক প্রণয় ভূষন দাস জানান, রিনাকে মৃত অবস্থায় এবং তার স্বামী সিদ্দিককে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। সিদ্দিকের গলায় ও পেটে ধারালো অস্ত্রের জখম অবস্থায় সিদ্দিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
নিহতের ছোট বোন মনিতারা বেগম জানান, সিদ্দিকের বড় ভাইয়ের ছেলে মো. হোসেন ঢাকার আশুলিয়া থেকে একটি স্কুলে নবম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। শনিবার হোসেন তার আরও দুই বন্ধুকে নিয়ে রিনাদের বাসায় উঠে। তারা রাতের খাবার সেরে ওই বাসায় একটি কক্ষে শুয়ে পড়ে। সকালে এক পর্যায়ে তারা সিদ্দিকের ছেলে দেলোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রীকে ওই ভবনের একই তলার অপর কক্ষে বাইরে থেকে আটকে রাখে। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তার বাবার ডাক-চিৎকার শুনে দেলোয়ার ও তার স্ত্রী হেনা বেগমের ঘুম ভেঙে যায়। পরে ঘর থেকে বেরুতে চেষ্টা করলে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ রয়েছে বুঝতে পেরে ডাক চিৎকার শুরু করে। এসময় প্রতিবেশীরা গিয়ে সিদ্দিককে রক্তাক্ত অবস্থায় এবং ঘরে রিনার লাশ পড়ে থাকতে দেখে। পরে তাদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। ঘটনার পর থেকে হোসেন ও তার বন্ধুরা পলাতক রয়েছে।
আহত সিদ্দিক ব্যাপারী বলেন, সকাল সাড়ে সাতটার দিকে তিনি তাদের নির্মাণাধীন ভবনের ৪র্থ তলায় পানি দিয়ে নিচের তলায় কক্ষে ঢুকছিলেন। এ সময় তার বড় ভাইয়ের ছেলে হোসেনসহ তার দুই বন্ধু মিলে রিনাকে গলায় ওড়না পেচিয়ে ও বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করছিল। এসময় তিনি ডাক চিৎকার শুরু করলে হোসেন ও তার বন্ধুরা তাকে রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে। এক পর্যায়ে তাকে ছুরি দিয়ে গলা ও পেটে আঘাত করে পালিয়ে যায়। তার স্ত্রীকে হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পরিদর্শক শেখ মো. মিজানুর রহমান আরও জানান, রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় কেউ মামলা বা অভিযোগ দেয়নি।
আমিনুল ইসলাম/এমএএস/এমএস