কাঁটাতার পেরিয়ে ৯ বছর পর মায়ের কাছে ফিরলেন বীথি
সীমান্তের কাঁটাতার পেরিয়ে দীর্ঘ নয় বছর পর মায়ের কাছে ফিরেছেন বীথি আক্তার (২৮) নামে এক বাংলাদেশি নারী। ভারতের ত্রিপুরা থেকে দেশে ফিরে মা সাফিয়া বেগমকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভারতের ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সহায়তায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফেরেন বীথি। তিনি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার পাচুয়া গ্রামের হিমায়েত খন্দকারের মেয়ে।
মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন বীথি ২০১০ সালে ঢাকা থেকে নিখোঁজ হন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান পায়নি পরিবারের লোকজন। পরে ২০১২ সালে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ধলাই জেলার সালেমা থানা পুলিশ তার সন্ধান পায় এবং তাকে আদালতে হাজির করে। তবে মানসিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় তিনি কীভাবে ত্রিপুরায় গেছেন সে তথ্য কেউ জানাতে পারেনি। বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে চিঠি চালাচালি হয়। বীথি মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় ওই বছরের ১৭ মার্চ আদালতের নির্দেশে তাকে ধলাই জেলার মডার্ন মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি এতদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন।
চিকিৎসা শেষে সুস্থ হওয়ায় ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সহায়তায় বুধবার দুপুরে নিজ দেশে ফেরেন বীথি। দীর্ঘ ৯ বছর পর মেয়েকে পেয়ে মা সাফিয়া বেগমও কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতরাণা হয়। মা-মেয়ের এ দৃশ্য দেখে আপ্লুত হয়ে পড়েন সেখানে উপস্থিত সবাই। মেয়েকে ফিরে পেয়ে ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন সাফিয়া বেগম।
ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনার কিরিটি চাকমা সাংবাদিকদের জানান, ত্রিপুরা রাজ্য সরকার ও পুলিশকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। তারা এ উদ্যোগ না নিলে বীথির কি হতো সেটি আমরা জানি না। মডার্ন মানসিক হাসপাতালে আরও কয়েকজন বাংলাদেশি নাগরিক চিকিৎসাধীন। তাদের দেশে ফেরাতে আমরা উদ্যোগ নেব।
এ সময় চেকপোস্টে ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রথম সচিব মো. জাকির হোসেন ভূইয়া, দ্বিতীয় সচিব এস এম আসাদুজ্জামান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ২৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মুহাম্মদ গোলাম কবির, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার রেইনা ও আখাউড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রসুল আহমদ নিজামী উপস্থিত ছিলেন।
আজিজুল সঞ্চয়/এমএএস/এমএস