অবশেষে নির্যাতনকারী হাসানের বিরুদ্ধে মামলা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ভোলা
প্রকাশিত: ০৯:৩৫ এএম, ২৯ অক্টোবর ২০১৯

ভোলার লালমোহন উপজেলায় ইয়াবা বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় দুই মেয়ের সামনে মোটরশ্রমিক বাবা জসিমকে হাত-পা বেঁধে উলঙ্গ করে নির্যাতনের ঘটনায় অবশেষে মামলা করা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার জসিমের স্ত্রী জয়নব বিবি বাদী হয়ে গতকাল সোমবার নির্যাতনকারী হাসানের বিরুদ্ধে লালমোহন থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

এ মামলায় হাসানকে গ্রেফতার দেখিয়ে সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর খায়রুল কবীর। গতকাল সোমবার বিকেলে লালমোহন থানায় সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাবিবুল হাসানও উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ভিডিওটি ২০১৮ সালের ২৫ জুলাইয়ের। ওই সময় কেউ এ ঘটনা প্রকাশ করেনি। জসিমকে নির্যাতনের কোনো অভিযোগও থানায় দায়ের করেনি। সোমবার ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে। এর পরপরই ভিকটিম জসিমের স্ত্রীকে ডেকে এনে মামলা নেয়া হয়েছে। আটক হাসানের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ও হালিশহর থানায় মানব পাচার, ডাকাতি ও চুরির অভিযোগে তিনটি মামলা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, নির্যাতনের শিকার জসিমের বিরুদ্ধেও পাঁচটি মামলা রয়েছে। গত ৬ মাস ধরে সে কোনো এক মামলায় কারাগারে রয়েছে। যার কারণে তার স্ত্রী হাসানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লালমোহন উপজেলার ২নং কালমা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মিস্ত্রি বাড়ির আবু ড্রাইভারের ছেলে বিভিন্ন মামলার আসামি হাসান একই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাহ আলী বাড়ির মৃত আব্দুল মোন্নাফের ছেলে মোটরশ্রমিক জসিমকে দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা বিক্রির জন্য নানাভাবে প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ডাওরী বাজারে জসিমকে জনসম্মুখে উলঙ্গ করে তার দুই শিশু কন্যার সামনে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্মমভাবে নির্যাতন করেন হাসান। ওই ঘটনায় নির্যাতিত জসিম ভয়ে তখন মামলা করতে পারেননি, এমনকি ভিডিওটি প্রকাশ করতে কেউ সাহস পায়নি। গত রোববার একটি মামলায় হাসানকে লালমোহন থানা পুলিশ গ্রেফতার করলে ওই নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর এ নিয়ে সারা দেশের মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

স্থানীয়রা জানান, নির্যাতনকারী হাসান নিজেকে কালমা ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা হিসেবে পরিচয় দিতেন। তবে তিনি ইউনিয়ন যুবলীগের কোনো পদে নেই বলে স্থানীয় যুবলীগ সূত্রে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় যুবলীগের এক নেতা জানান, হাসান যুবলীগের নানা কর্মসূচিতে মাঝে-মাঝে উপস্থিত থাকতো। তবে যুবলীগে তার কোনো পদ নেই। যুবলীগের নাম ব্যবহার করে হাসান ইয়াবা ব্যবসা ও ডাকাতি করতো। তার ভয়ে পুরো এলাকা আতঙ্কে থাকতো। হাসান গ্রেফতারের খবরে পুরো এলাকায় স্বস্তি ফিরেছে।

এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রিমন পঞ্চায়েত বলেন, গ্রেফতার হাসান যুবলীগের কেউ নয়। আমরা তাকে চিনি না।

আরএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।