জিপগুলো এখন ইঁদুরের বাড়ি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: ০৫:২৩ পিএম, ২৫ অক্টোবর ২০১৯

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে প্রায় ৩০ বছর ধরে খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে ৭টি জিপ গাড়ি। মেরামত অযোগ্য এসব গাড়ি দীর্ঘ সময়েও নিলাম প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় ঝোপ-জঙ্গলে পড়ে থাকায় এর সব যন্ত্রাংশ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। কয়েকটি গাড়ির ভেতর ইঁদুর বাসা বেঁধেছে। অথচ গাড়িগুলো সময়মতো নিলাম হলে সরকারের কোষাগারে জমা হতো কয়েক লাখ টাকা।

সরেজমিন দেখা গেছে, অকেজো গাড়িগুলো খোলা আকাশের রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে। গাড়ির ভেতর ও বাইরের সব লোহা-লক্করে মরিচা ধরে ক্ষয়ে গেছে। মাটি আর জঙ্গলে পূর্ণ হয়েছে গাড়িগুলো। এখন আর কোনো যন্ত্রাংশই কাজে লাগানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন অফিসের কর্মচারীরা।

Kurigram-Jeep-Gari

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৯-৯০ সালের দিকে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে ৭টি জিপ গাড়ি মেরামত অযোগ্য হয়ে পড়ে। এসব গাড়ির মধ্যে ল্যান্ড রোভার, ইসুজু ও ভিটারাসহ দামি কোম্পানির গাড়িও ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিনেরও চিঠি চালাচালি ছাড়া নিলামের ক্ষেত্রে আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। বৈদেশিক সংস্থার ৩টি গাড়ি থাকায় প্রক্রিয়া শেষ করতে সময় লাগছে বলে বলে অজুহাত দেখাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কোনো ফাইলও ছিল না। নিলামের উদ্যোগ নেয়ার পর চলতি বছরের গোড়ার দিকে কুড়িগ্রাম বিআরটিএ অফিস চারটি গাড়ি অকেজো ঘোষণা করে প্রতিবেদন দেয়। এসব গাড়ি ‘প্রান্তিক ও খামার পদ্ধতিতে শস্য নিবিড়করণ প্রকল্প’সহ বিভিন্ন প্রকল্প থেকে পাওয়া। যা কর্মকর্তারা ব্যববহার করতেন। বাকি ৩টি গাড়ি বৈদেশিক সংস্থার হওয়ায় স্থানীয় বিআরটিএ অকেজো বা মেরামত অযোগ্য ঘোষণার প্রতিবেদন দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। তবে কমিটির মাধ্যমে অকেজো ঘোষণা করা যেতে পারে বলে মতামত দেন।

Kurigram-Jeep-Gari

গত ২৯ এপ্রিল কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালককে এসব বিষয় জানিয়ে কমিটি গঠনের অনুরোধ জানান। কিন্তু এরপর কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। কমিটি গঠন না হওয়ায় নিলাম প্রক্রিয়া শুরুই করা যায়নি। কারণ কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিআরটিএ মূল্য নির্ধারণ করবে। তারপর শুরু হবে নিলাম প্রক্রিয়া।

দীর্ঘদিনেও গাড়িগুলো নিলাম না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান বলেন, আমি যোগদানের পর আমার স্টাফরা ভয় দেখান যে, কোনো স্যার মাথা ঘামায়নি। আপনি ওদিকে যাইয়েন না। তা সত্ত্বেও ঢাকায় কথা বলে মোটরযান পরিদর্শককে এনে প্রতিবেদন নেই। এরপর একটি কমিটি গঠনের অনুরোধ জানিয়ে চার মাস আগে ঢাকায় পত্র দেই। কিন্তু প্রতি উত্তর আসেনি। তাছাড়া ঝামেলা এড়াতে আমরা ঢাকা থেকে নিলাম আহ্বান করার অনুরোধ জানিয়েছি।

নাজমুল/এমএএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।