শিশুদের শৈশবকে আমরা হত্যা করেছি
সুনামগঞ্জ-৪ আসনের এমপি পীর ফজলুর মিসবাহ বলেছেন, আমি আমার শৈশব বলতে যা বুঝতোম, আজকের শিশুদের মধ্যে তা নেই। শিশুদের শৈশবকে আমরা হত্যা করেছি। তুহিনকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, সেভাবে সব শিশুর শৈশবকে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, শৈশবে আমরা স্কুল থেকে এসে বাসায় বই খাতা রেখে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে খেলাধুলা করতাম। কিন্তু বর্তমানে অবস্থা এমন হয়েছে যে আমি ছেলেকে বাড়ির ভেতরেই পড়াতে চাই, খেলাতে চাই। আমার ছেলেরা মাঠে গিয়ে খেলাধুলা করবে তা এখন আর নেই।
শুক্রবার সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমির হাসন রাজা মিলনায়তনে সুনামগঞ্জ জেলা খেলাঘরের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এমপি পীর ফজলুর মিসবাহ বলেন, আমরা অভিভাবকরা অসুস্থ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে পড়েছি। সবাই মনে করেন তার সন্তান সেরা হবে। পরিবারের ইচ্ছা সন্তান হবে ডাক্তার/ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু সন্তানের ইচ্ছা সে হবে ফুটবলার বা অন্য কিছু। এ অবস্থায় অভিভাবকরা সন্তানের ওপর জোর করে চাপিয়ে দিচ্ছেন তাদের ইচ্ছা। অথচ একজন মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করানো মানে হলো তাকে হত্যা করা।
জেলা খেলাঘরের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এনাম আহমেদের পরিচালনায় ও সভাপতি বিজন সেন রায়ের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, কেন্দ্রীয় খেলাঘরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রুনু আলী, মৌলভীবাজার খেলাঘরের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, জেলা খেলাঘরের সহ-সভাপতি অলক ঘোষ চৌধুরী প্রমুখ।
অভিভাবকদের উদ্ধেশ্যে এমপি পীর ফজলুর মিসবাহ আরও বলেন, শিশুদের ওপর জোর করে কিছু চাপিয়ে দেবেন না। শিশুকে তার ইচ্ছার মর্যাদা দিতে শিখতে হবে। তার মধ্যে সাংস্কৃতিক ও খেলাধুলা চর্চা অবশ্যই রাখতে হবে। আমি মনেকরি খেলাঘর যারা করে, তারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনাকে লালন করে বেড়ে উঠবে। তারা মানবিক মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠবে। আপনাদের যেকোনো প্রয়োজনে আমি খেলাঘরের পাশে রয়েছি।
আলোচনা সভার শুরুতে জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়।
মোসাইদ রাহাত/এমএমজেড/এমকেএইচ