পুকুর ভরাট করে ভবন করছে চেম্বার, মসজিদে ফাটল

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশিত: ০৭:৫২ পিএম, ১৯ অক্টোবর ২০১৯

ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির বিরুদ্ধে একটি পুকুর ভরাট করে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। ভবন নির্মাণের জন্য গভীর খনন কাজের ফলে পুকুরের পাশে থাকা একটি মসজিদের ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে মসজিদে আগত মুসল্লিসহ স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নানাভাবে উদ্যোগ নিয়েও পুকুর ভরাট ও নির্মাণকাজ বন্ধ করতে পারছে না মসজিদ কর্তৃপক্ষ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৯ জুন জেলা শহরের কুমারশীল মোড় এলাকার মদিনা মসজিদ সংলগ্ন ১নং খতিয়ানভুক্ত ১৮১৯ দাগে ১৫ শতক ডোবা শ্রেণির ভূমি ৩০ বছরের জন্য বন্দোবস্ত নেয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি। সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোশাররফ হোসেনের অস্থায়ী বন্দোবস্ত দেয়া ভূমিটি সিএস খতিয়ানে রাধিকা মোহন চৌধুরী ও জগত চন্দ্র রায়ের ব্যক্তিমালিকানার পুকুর এবং বিএস খতিয়ানে জেলা প্রশাসনের মালিকানার পুকুর শ্রেণিভুক্ত।

বন্দোবস্ত নেয়ার পর অনুমতি ছাড়াই পুকুর ভরাট করে ২০১৮ সালের ১৫ মে বহুতল ভবন নির্মাণকাজ শুরু করে চেম্বার কর্তৃপক্ষ। ছয়তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণে চেম্বার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চেম্বারের সহ-সভাপতি কাজী জাহাঙ্গীরের চুক্তিও হয়।

Brahmanbaria-Pic-1

বন্দোবস্তে হস্তান্তরযোগ্য ও সাংগঠনিক কাজ পরিচালনার উদ্দেশ্যে চেম্বার কর্তৃপক্ষকে এ ভূমি দেয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও ডেভেলপারের সঙ্গে ৬০ঃ৪০ শতাংশে চুক্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। চেম্বার কর্তৃপক্ষ বন্দোবস্তের শর্ত লঙ্ঘন করে বহুতল ভবন নির্মাণকাজ করছে।

এদিকে অপরিকল্পিতভাবে ভবন নির্মাণের জন্য গভীর খননকাজ করায় সেখানে থাকা মদিনা জামে মসজিদের একাংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে মসজিদের মুসল্লি ও আশপাশের ভবন মালিকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। মসজিদে ফাটল দেখা দেয়ার পর জেলা প্রশাসনের নির্দেশে গভীর খননকাজ বন্ধ রয়েছে।

মদিনা জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি তাজ মোহাম্মদ ইয়াছিন সাংবাদিকদের জানান, নানাভাবে আইনি পদক্ষেপ নিয়েও আমরা চেম্বার কর্তৃপক্ষের বহুতল ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ করতে পারছি না। আমরা এর প্রতিকার চাই।

Brahmanbaria-Pic-1

অভিযোগ অস্বীকার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আজিজুল হক জাগো নিউজকে বলেন, সব আইন ও শর্ত মেনেই আমরা নির্মাণকাজ করছি। তবে বন্দোবস্তের ভূমিতে স্থায়ী ভবন নির্মাণের কোনো অনুমতিপত্র আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি কোনো কাগজ দেখাতে পারেননি। এছাড়া মসজিদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এমন তথ্যও তার জানা নেই বলে বলে জানান।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা খান জাগো নিউজকে বলেন, মসজিদে ফাটলের বিষয়টি জানতে পেরে চেম্বার কর্তৃপক্ষকে নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দুপক্ষের বক্তব্য শুনে এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আজিজুল সঞ্চয়/এমএএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।