শিশু তুহিন হত্যায় পরিবারের লোকজন জড়িত!
পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই খুন করা হয় পাঁচ বছর বয়সী তুহিন মিয়াকে। সোমবার সন্ধ্যায় তুহিনের বাবাসহ থানায় নিয়ে যাওয়া পাঁচজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য পেয়েছে পুলিশ। সন্ধ্যায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান এমন তথ্য জানান।
তিনি বলেন, তুহিন হত্যাকাণ্ডে পুলিশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। তুহিনকে কেন মারা হয়েছে, কীভাবে মারা হয়েছে, কয়জনে মেরেছে পুরো ঘটনা জানা গেছে। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে এখন কিছু বলবো না। তবে শিগগিরই আদালতের মাধ্যমে পুলিশ রেকর্ড দিয়েই আসামিদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, এ হত্যাকাণ্ডটি পূর্বশত্রুতার জেরে হতে পারে। যাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে তাদের মধ্যেই তিন-চারজন জড়িত বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, তুহিন হত্যাকাণ্ডে পারিবারিক সম্পৃক্ততা রয়েছে। কারণ তারা বাবা আরেকটি হত্যা মামলার আসামি। তাছাড়া আমরা যাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে এসেছি তাদের মধ্যে কয়েকজন হত্যা মামলা ও লুটপাট মামলার আসামি। আমাদের প্রাথমিক ধারণা, পূর্বশত্রুতার জেরেই খুন হয় তুহিন।
প্রসঙ্গত, সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় পাঁচ বছরের শিশু তুহিন হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিতে দুই ব্যক্তির নাম লেখা রয়েছে। ওই দুটি ছুরি শিশু তুহিনের পেটে বিদ্ধ ছিল। তুহিনের মরদেহ গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। সেই সঙ্গে শিশুটির লিঙ্গ ও কান কেটে দেয়া হয়।
রোববার রাত ৩টার দিকে উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের কেজাউড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সোমবার ভোরে গাছের সঙ্গে ঝুলানো অবস্থায় শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় তুহিনের পেটে দুটি ধারালো ছুরি বিদ্ধ ছিল। তার পুরো শরীর রক্তাক্ত, কান ও লিঙ্গ কর্তন অবস্থায় ছিল। নিহত তুহিন ওই গ্রামের আব্দুল বাছিরের ছেলে।
অন্যদিকে শিশু তুহিনের পেটে বিদ্ধ দুটি ছুরিতে ওই গ্রামের বাসিন্দা ছালাতুল ও সোলেমানের নাম পেয়েছে পুলিশ। তাদের ফাঁসাতে এ ধরনের নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটনা হয়েছে বলে ধারণা স্থানীয়দের।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কেজাউরা গ্রামের সাবেক মেম্বার আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে নিহত তুহিনের বাবা আব্দুল বাছিরের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছে। ছালাতুল ও সোলেমান সাবেক মেম্বার আনোয়ার হোসেনের লোক। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এমন নৃশংস ঘটনা ঘটেছে বলে তাদের ধারণা।
এরই মধ্যে এ ঘটনায় তুহিনের বাবাসহ পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়েছে পুলিশ। তারা হলেন তুহিনের বাবা আব্দুল বাছির, চাচা আব্দুল মুছাব্বির, ইয়াছির উদ্দিন, প্রতিবেশী আজিজুল ইসলাম, চাচি খাইরুল নেছা ও চাচাতো বোন তানিয়া।
এ ব্যাপারে রাজানগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৌম চৌধুরী বলেন, এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড দিরাই উপজেলার মানুষ এর আগে দেখেনি। আমরা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই, ঘটনাটি তদন্ত করে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হোক।
মোসাইদ রাহাত/এমএএস/এমএস