মহাসড়ক দখল করে গাড়ি পার্কিং
সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়ক দখল করে চলছে যানবাহন পার্কিং। সুনামগঞ্জ বাস টার্মিনালে পর্যাপ্ত জায়গা থাকার পরও মহাসড়কের মল্লিকপুর থেকে ওয়েজখালি এলাকার প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কের এক পাশ দখল করে পার্কিং করা হচ্ছে বাস-মিনিবাস। এতে ব্যস্ততম সড়কে চলাচলের পথ সংকুচিত হয়ে বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।
শনিবার সরেজমিনে মল্লিকপুর নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে শুরু করে ওয়েজখালি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কের এক পাশ দখল করে সারিবদ্ধভাবে বাস পার্কিং করা হয়েছে। শ্যামলী, এনা, কর্ণফুলী পরিবহনসহ বিভিন্ন দূরপাল্লার বাস সড়ক দখল করে পার্কিংয়ে রয়েছে। পার্কিংয়ের কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে চলছে অন্যান্য যানবাহন। বিশেষ করে রাতে এই গাড়িগুলো সড়কে দখল করে থাকায় দুর্ঘটনার ঝুঁকিটা বেড়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বাসগুলো যাত্রীদের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেয়। পরে মল্লিকপুর নতুন বাসস্ট্যান্ড ও ওয়েজখালি এলাকায় সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক দখল করে বাসগুলো সারিবদ্ধভাবে পার্কিংয়ে রাখা হয়।
সিএনজি চালক সেলিম মিয়া বলেন, মল্লিকপুর-ওয়েজখালি এলাকার প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কের এক পাশ দখল করে থাকে আঞ্চলিক ও দূরপাল্লার বাসগুলো। সকাল-সন্ধ্যায় দূরপাল্লার বাসগুলো পিটিআইয়ের সামনে সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কের এক পাশ দখল করে পার্কিংয়ে থাকে। ফলে চলাচলের রাস্তা সংকুচিত হয়ে যায়। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি দেখা দেয়। সৃষ্টি হয় ভয়াবহ যানজট। মহাসড়ক থেকে বাস পার্কিং উঠিয়ে দেয়া জরুরি।
বাসচালক রজব আলী বলেন, লোকাল বাস খুব কমই থাকে সড়কের পাশে। কিন্তু দূরপাল্লার বাসগুলোর বেশির ভাগই সড়কে পার্কিং করা হয়। এতে সবার সমস্যায় পড়তে হয়। দুর্ঘটনার আশঙ্কা তো আছেই, সেই সঙ্গে লেগে থাকে যানজট।
শ্যামলী বাস কাউন্টার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা আবুল হোসেন বলেন, আমরা ইচ্ছা করে সড়কে গাড়ি রাখি না। গাড়িগুলো বেশি সময় সড়কে থাকেও না। প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের অনেকবার কথা হয়েছে বাসগুলো পার্কিংয়ের জন্য স্থান নির্ধারণ করে দেয়ার। কিন্তু এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। তাই ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও সড়কে গাড়ি পার্কিং করা হয়।
জেলা ট্রাফিক বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, সড়ক দখল করে বাস পার্কিংয়ের বিষয়টি আমি অনেকবার আইন-শৃঙ্খলা সভায় তুলেছি। যদি দূরপাল্লার বাসের জন্য কোনো পার্কিং ব্যবস্থা না করা হয় তাহলে আমরা তাদেরকে কোনো শাস্তি দিতে পারব না। পার্কিং ব্যবস্থা যদি করে দেয়া হয় তাহলে অবশ্যই অবৈধ পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুট বলেন, বাস টার্মিনাল কখনো দুটি হয় না। সুনামগঞ্জে যে একটি বাস টার্মিনাল রয়েছে সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা রয়েছে দূরপাল্লার বাস রাখার জন্য। তারা সেখানেই বাসগুলো রাখতে পারে। যদি সেখানে কোনো সমস্যা হয় তাহলে জেলা পরিষদ ব্যবস্থা নেবে।
মোসাইদ রাহাত/এএম/এমএস