১৩ দিন ধরে নিখোঁজ কমল কান্তি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি বরগুনা
প্রকাশিত: ০৪:৪৭ পিএম, ০৪ অক্টোবর ২০১৯

বরগুনার বামনা উপজেলার ডৌয়াতলা ইউনিয়নের দক্ষিণ গুদিঘাটা গ্রামের কমল কান্তি হাওলাদার (৩১) গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো হদিস পায়নি পরিবার। বরগুনা জেলার বামনা থানায় এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

শুক্রবার সকালে বরগুনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ১১ মাস বয়সী কন্যাকে নিয়ে স্বামীর সন্ধান দাবি করে কান্নায় ভেঙে পড়েন কমল কান্তির স্ত্রী অনিতা রাণী (২৫)।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, তার স্বামী কমল কান্তি হাওলাদার বামনা উপজেলার একটি ইটভাটা ‘মা ব্রিক্স কোম্পানির’ ম্যানেজার ছিলেন। গত ২১ সেপ্টেম্বর ওই ইটভাটার কিছু মালামাল কিনতে ইটভাটার মালিক মোস্তফা ফকির তাকে ঢাকা পাঠান। পরদিন ২২ সেপ্টেম্বর সকাল পর্যন্ত অনিতা রাণী তার স্বামীর সঙ্গে কথা বলতে পারলেও এরপর থেকে আর কোনো কথা হয়নি এবং কোনো খোঁজও পাওয়া যায়নি।

অনিতা রাণী জানান, তার স্বামী কমল কান্তি মা ব্রিক্সের মালিক মো. মোস্তফা ফকিরের খুব বিশ্বস্ত ছিলেন। তবে মালিকের শ্যালক বসির (৩৫) ও ভায়রা রফিক (৩৬) এবং মনির ও রব সর্দার যারা ইটভাটার কর্মচারী ছিলেন তাদের সঙ্গে কমল কান্তির সম্পর্ক ভালো ছিল না। মালিক মোস্তফা ফকির যেহেতু কমল কান্তিকে বেশি বিশ্বাস করতো সেহেতু তারা কমল কান্তিকে আড়চোখে দেখতো।

তিনি আরও জানান, তার স্বামী যে পরিবহনে চড়ে ঢাকা গেছেন সেই গাড়ির নাম ‘রাফিন সাফিন’। ওই পরিবহনের একজন হেলপার জাহাঙ্গীর কমল কান্তির সঙ্গে একত্রেই ঢাকা গেছেন। তারা ফেরিঘাটে একত্রে ভাতও খেয়েছেন।

অনিতা রাণী জানান, নিখোঁজের ছয়দিন পর গত ২৭ সেপ্টেম্বর কমল কান্তির ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দিয়ে কমল কান্তির ছোটভাই বিভূতিভূষণের মোবাইল নম্বরে একটি ফোন আসে। সেই ফোনে অপরিচিত একজন লোক কথা বলেন এবং কমল কান্তির মুক্তির জন্য ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। তবে কমলকান্তির সঙ্গে কথা বলতে চাইলে সে সময় তিনি জানান, সে বেহুঁশ রয়েছে। এরপর ফোনটি কেটে দেয়া হয়।

অনিতা রাণী জানান, তার স্বামীর নিখোঁজের পেছনে ‘রাফিন সাফিন’ পরিবহনের হেলপার জাহাঙ্গীর এবং ‘মা ব্রিক্সের’ কর্মচারী রফিক, বসির, মনির এবং রব সর্দার জড়িত রয়েছে বলে তার সন্দেহ । এ বিষয়ে তিনি পুলিশের সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছেন।

এ বিষয়ে বামনা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাসুদুজ্জামান বলেন, মাওয়া ফেরিঘাটে যাওয়া পর্যন্ত যেহেতু তার স্বজনদের সঙ্গে কথা হয়েছে সেহেতু ঘটনা যাই ঘটুক না কেন সেখানেই ঘটেছে। তাই বামনা থানা কর্তৃপক্ষের তেমন কিছু করণীয় নেই। তারপরেও আমরা বামনা থেকে সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি।

এ বিষয়ে মা ব্রিক্সের মালিক মো. মোস্তফা ফকির বলেন, আমিও অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি। কোথাও তার সন্ধান মিলছে না।

তার শ্যালক ও ভায়রার বিষয়ে অনিতা রাণীর সন্দেহের কথা জানালে তিনি বলেন, যার স্বামী নিখোঁজ হয়েছে তিনি অনেক কিছুই সন্দেহ করতে পারেন। তবে তা সত্য নয়।

সাইফুল ইসলাম মিরাজ/আরএআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।