পদ্মায় পানি বৃদ্ধি, নড়িয়ায় ভাঙন শুরু

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি শরীয়তপুর
প্রকাশিত: ০২:৩৮ পিএম, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯

পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শরীয়তপুরের নড়িয়া রক্ষা বাঁধের ১০০ মিটার এলাকা নদীতে ধসে পড়েছে। এতে কেদারপুর দারুছালাম জামে মসজিদ, অন্তত ১৩টি বসত ঘর, ফসলি জমিসহ গাছপালা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নড়িয়া উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের উত্তর কেদারপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে ভাঙন কবলিত এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। রাতেই আতঙ্কিত ৪০টি পরিবার তাদের ঘর অন্যত্র সড়িয়ে নিয়েছে।

শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার মো. গোলাম মাওলা বলেন, পদ্মা নদীর পানি প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে। জোয়ারের সময় চলছে। প্রচুর স্রোত থাকায় নড়িয়া রক্ষা বাঁধের উত্তর কেদারপুর এলাকায় ১০০ মিটার অংশ ধসে পড়েছে।

nari2

উত্তর কেদারপুর এলাকার নার্গিস বেগম বলেন, অনেক টাকা খরচ করে আমরা তিনতলা বিল্ডিং করি। গত বছর পদ্মা নদীতে সেই বিল্ডিং ধসে গেছে। এখন যেখানে থাকছি তাও বৃহস্পতিবার রাতে ধসে পড়েছে। এখন কোথায় যাব?

কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাফেজ সানাউল্লাহ জানান, বৃহস্পতিবার রাতে উত্তর কেদারপুর নড়িয়া রক্ষা বাঁধ ধসে পড়েছে। এতে একটি মসজিদ, পাকা বাড়ি, ফসলি জমিসহ গাছপালা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখনও থেমে থেমে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এলাকার লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

nari2

নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়ন্তি রুপা রায় বলেন, আশপাশের লোকজনকে নিরাপদে সড়িয়ে নেয়ার কাজ শুরু করেছি। ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনের কাজ চলছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন ডাম্পিংয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রকাশ কৃঞ্চ সরকার জানান, আমরা নিয়মিত প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করি। কিন্তু কোথাও কোনো ফাটল দেখি নাই। হঠাৎ উত্তর কেদারপুর নড়িয়া রক্ষা বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছেছি। জরুরি ডাম্পিং শুরু করা যায় কিনা, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। এখনও থেমে থেমে ভাঙন চলছে।

nari2

উল্লেখ্য, গত বছর নড়িয়ার আট কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ব্যাপক ভাঙন ছিল। ভাঙনে ওই এলাকার ৫ হাজার ৮১টি পরিবার গৃহহীন হয়। নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ অসংখ্য স্থাপনা বিলিন হয়ে যায়। ভাঙন ঠেকাতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এক হাজার ৯৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্পর অনুমোদন করে। পানি উন্নয়ন বোর্ড নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডকে ওই কাজের কার্যদেশ প্রদান করেন। যার মধ্যে ৫৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে নড়িয়ার সুরেশ্বর হতে জাজিরার কায়ূম খার বাজার পর্যন্ত আট দশমিক নয় কিলোমিটার অংশে নদীর তীর রক্ষার কাজ শুরু হয়। বাকি টাকা দিয়ে নদীর চর খনন করা হবে। গত বছর ১২ ডিসেম্বর ওই প্রকল্পের নদীর তীর রক্ষার কাজ শুরু করা হয়।

মো. ছগির হোসেন/এমএএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।