আজ কিশোরী নাসরিনের বিয়ে
মাগুরা সদর উপজেলার ইছাখাদা হাই স্কুলের দশম শ্রেণির মেধাবি শিক্ষার্থী নাসরিনের (১৩) বিয়ে। নাসরিন মাগুরা সদর উপজেলার কাঁশিনাথপুর গ্রামের কারিকর পাড়ার সাহেদ আলীর মেয়ে। জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন,স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিষয়টি না জানলেও ইতোমধ্যে শুক্র ও শনিবার নাসরিনের বিয়ে পূর্ববর্তী সকল আচার-অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
নাসরিনের স্বপ্ন সে পড়াশোনা করে একদিন অনেক বড় হবে। দেশ ও দশের মুখ উজ্জ্বল করবে। কিন্তু আজ বাল্য বিয়ের অভিশাপে ভেঙে যেতে বসেছে সেই স্বপ্ন। পারিবারিক চাপে ৫০ বছরের এক বিপত্নিকের সঙ্গে তার বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ইছাখাদা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমিন হোসেন জাগো নিউজকে জানান, আজকালের মধ্যেই গোপনে মাত্র ১৩ বছর বয়সী নাসরিন বসবে বিয়ের পীড়িতে। স্কুলের পক্ষ থেকে নাসরিনের বাবা সাহেদ আলীকে বুঝানো হলেও কোনো কিছুতেই বুঝ নিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।
নাসরিনের সহপাঠিরা জানায়, আনুমানিক ৫০ বছর বয়ষ্ক এক বৃদ্ধের সঙ্গে তার বিয়ে হতে চলেছে। নাসরিনের হবু বরের প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ায় তিনি আবার নতুন করে বিয়ে করার প্রস্তুতি নেন। নাসরিনের এবার এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার কথা থাকলেও বাড়ির লোকের চাপে তার পড়ালেখা এখানেই শেষ হতে চলেছে।
নাসরিন তার সহপাঠিদের জানিয়েছে, সে যদি ওই লোকটিকে বিয়ে না করে তাহলে তার মা সাহানা বেগম গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করবে বলে হুমকি দিয়েছেন।
এ বিষয়ে মেয়ের ভাই শাহীন কারিকর সাংবাদিকদের বলেন, তাদের বাবা ইছাখাদা বাজারে শাহীন স্টোর নামের একটি মুদি দোকান পরিচালনা করেন। অপরদিকে হবু বরের অর্থনৈতিক অবস্থা তাদের তুলনায় খুব ভালো হওয়ায় তারা এ বিয়েতে সম্মতি দিয়েছেন।
ওই স্কুলের শিক্ষার্থী ও সহপাঠিরা এ বাল্য বিয়েকে আটকানোর জন্য প্রশাসনের একান্ত সহযোগিতা কামনা করেছেন। এছাড়া এলাকাবাসী অর্থলোভী সাহেদ আলীর এ জঘন্য কাজের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে এর প্রতিকার দাবি করেছেন।
মো. আরাফাত হোসেন/এমজেড/পিআর