শতবর্ষী ২২টি গাছ বিক্রি হলো ২ লাখ টাকায়!


প্রকাশিত: ০১:৩৭ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫

ভবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অজুহাতে বগুড়ার একটি স্কুলের ২২টি মূল্যবান গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। বর্তমান বাজার মূল্যে ১০ লক্ষাধিক টাকার এই গাছগুলো বিক্রি করা হয়েছে মাত্র ২ লাখ ২০ হাজার টাকায়। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী, স্থানীয় লোকজন ও অভিভাবকরা বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখালেও স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় এ ব্যাপারে কেউ প্রতিবাদ করেনি।

জানতে চাইলে আব্দুল গফফার নামের একজন অভিভাবক জানান, শতবর্ষী স্কুলের গাছগুলোও শতবর্ষীর কাছাকাছি। গাছের ছায়ায় মন জুড়ানো একটি পরিবেশের জন্য অন্যতম খ্যাতি ছিলো বগুড়া করোনেশন ইন্সটিটিউটের। কিন্তুু আজ সেই খ্যাতিতে পড়েছে কুঠারের আঘাত। একে একে কেটে ফেলা হয়েছে মূল্যবান ২২টি গাছ। নামমাত্র মূল্যে সেগুলো আবার বিক্রিও করা হয়েছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, কেটে ফেলা গাছগুলোর বেশির ভাগই বিশাল স্কুলের মাঠের সামনের অংশে এবং পেছনের অংশে ছিলো। গত শুক্রবার স্কুল ছুটির পর গাছগুলো কাটা শুরু হলেও সবাই বিষয়টি টের পায় শনিবার স্কুলে আসার পর। কিন্তুু ততক্ষণে প্রায় শতবর্ষী গাছগুলোর গোড়া কেটে ফেলা হয়েছে। সেগুলো ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শহরের মাটিডালি মোড়ে অবস্থিত ঠিকাদার মিঠু মিয়ার বিসমিল্লাহ কাঠ ঘরে। ২০টি রিকশাভ্যানে করে সকাল থেকে সারাদিন ধরে কাটা গাছের অংশগুলো বহন করা হয়।
কেটে ফেলা গাছগুলোর মধ্যে রয়েছে ১০টি মেহগনি গাছ, ১০টি রেইনট্রি (কড়ই) গাছ, ১টি আকাশমনি ও ১টি আমগাছ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্কুলের একজন কর্মচারী বলেন, পেছনে আরো যে ৫০টির মতো গাছ আছে সেগুলোও একইভাবে কাটার পরিকল্পনা চলছে। রাতারাতি হয়তো এই গাছগুলোও কেটে ফেলা হবে।

জানতে চাইলে করোনেশন ইন্সটিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম জানান, ৩ মাস আগে স্টাফ কাউন্সিলের সভায় গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর বন বিভাগ থেকে লোক এসে ঝুঁকিপূর্ণ গাছের তালিকা করে সেটির মূল্য ৯৬ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দিয়ে যায়। আমরা পত্রিকায় ঘোষণা দিয়ে দরপত্র আহ্বান করি। ১৪-১৫ জন তাতে অংশ নেন। এরপর সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে বিসমিল্লাহ কাঠ ঘরকে গাছ কাটার অনুমতি দেয়া হয়।

তবে বন বিভাগের রেঞ্জ অফিসার এনামুল হক গতকাল (শুক্রবার) সারাদিন তার মুঠোফোন রিসিভ করেননি। ফোন ধরার জন্য অনুরোধ জানিয়ে ম্যাসেজ করেও কোনো লাভ হয়নি।

এ ব্যাপারে স্কুল কমিটির সভাপতি জেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক লিটন পোদ্দার জানান, আইন মেনে গাছ কাটা হয়েছে।  এখানে কোনো অনিয়ন করা হয়নি। আর গাছগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হবার কারণে এর আগে এলাকাবাসী অভিযোগ দিয়েছিলো। এ কারণে সেগুলো কেটে ফেলা হয়।

লিমন বাসার/এমএএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।