খোলা আকাশের নিচে নষ্ট হচ্ছে ২০০ কোটি টাকার সরঞ্জাম
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) নিজস্ব পার্কিং জোন না থাকায় বিভিন্ন ধরণের যানবাহনসহ প্রায় ২০০ কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। খোলা আকাশের নিচে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে সিসিকের এক্সেভেটর, ভ্যাকুয়াম ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরণের অত্যাধুনিক সরঞ্জামাদি। জং ধরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন দামি যানবাহন ও যন্ত্রাংশ। এমনকি নগরীর অন্যতম পর্যটন স্পট খ্যাত কিন ব্রিজের নিচেও অযত্নে রাখা হয়েছে ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের গাড়ি।
তবে ক্ষতি মেনে নিয়েই সিসিক বলছে, নির্ধারিত পার্কিং জোন তৈরি করার জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে জায়গার জন্য আবেদন করা হয়েছে। জায়গা পেলে নির্ধারিত স্থানেই রাখা হবে এসব গাড়ি ও সরঞ্জামাদি।
সূত্রে জানা গেছে, নাগরিক সেবা নিশ্চিতের জন্য হাইড্রোলিকসহ অত্যাধুনিক ৭১টি ট্রাক, পাঁচটি পানির ট্যাঙ্ক, ১২টি রাড বুলার, ৭টি ওয়াচার ভাউচার, ৬টি ভিম লিকটার, ৫টি এক্সেভেটর, ১টি ভ্যাকুয়াম ট্যাঙ্ক, ও একটি অত্যাধুনিক জিক্স র্যাকারসহ প্রায় ২০০ কোটি টাকার সরঞ্জামাদি নগরের বিভিন্ন স্থানে খোলা আকাশের নিচে রাখা হয়েছে। সিসিকের নির্ধারিত গ্যারেজ না থাকায় বন্দরবাজার খালি যায়গায় এবং কিন ব্রিজ এলাকার রাস্তার ওপর অনেকটা অপরিকল্পিতভাবে রাখা হচ্ছে গাড়িসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশ।
খোলা জায়গায় রাখার কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এসব অত্যাধুনিক যানবাহন ও জিনিসপত্র। এমনকি অনেক যন্ত্রাংশে জং ধরে বিকল হয়ে পড়েছে। এছাড়া কিন ব্রিজ এলাকায় যানবাহন রাখার ফলে পর্যটকসহ সাধারণ মানুষের চলাচল ব্যহত হচ্ছে। ঘুরতে আসা পর্যটকরাও ভালোভাবে কিন ব্রিজ ও সুরমা তীরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারছেন না। ফলে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বিশিষ্টজনরা বলছেন, শুধুমাত্র পার্কিং জোন নয়, শতকোটি টাকার মূল্যবান জিনিসের জন্য দক্ষ জনবল নিয়োগ করতে হবে। তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সব সময় তদারকিও করা উচিত।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মোহসিন আজিজ খান জানান, যন্ত্রপাতি এবং এসব গাড়ি যেভাবে ব্যবহার করা উচিত সেভাবে করা প্রয়োজন। এসব যন্ত্রের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নিয়মিত চেকআপ করা দরকার। তা না হলে এতে সমস্যা দেখা দিবে। যন্ত্রপাতি খুব অল্প সময়ে নষ্ট হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে সিসিকের প্রধান প্রকোশলী নুর আজিজুর রহমান জানান, নগরের মালনীছড়ার পাশে আমরা এসব গাড়ি রাখার জন্য সরকারিভাবে গ্যারেজ নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে একটি কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়েছি। তারা সয়েল টেস্ট করে আমাদের রিপোর্ট দিলে আমরা দ্রুত কাজ শেষ করে গাড়ি সেখানে স্থানান্তর করব।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চোধুরী বলেন, পার্কিং জোন তৈরির জন্য আমরা ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকের কাছে জায়গার জন্য আবেদন করেছি। জায়গাটা পেয়ে গেলে আমরা দ্রুত পার্কিং জোন তৈরি করব।
ছামির মাহমুদ/আরএআর/এমএস