এমপির সামনেই মারামারি করলেন আ.লীগের দুই চেয়ারম্যান
রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আয়েন উদ্দিনের সামনেই মারামারিতে জড়ালেন আওয়ামী লীগের দুই চেয়ারম্যান। তারা দুইজনই স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা। গতকাল বুধবার দুপুরের দিকে পবা উপজেলা পরিষদ ভবনের ভাইস চেয়ারম্যানের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
উপজেলা আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় অংশ নিতে ওই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন এমপি আয়েন উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন উপজেলার প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। উপস্থিত লোকজন ওই দুই চেয়ারম্যানকে থামান।
সূত্রে জানা গেছে, দুপুরের দিকে ভাইস চেয়ারম্যানের কক্ষ থেকে বের হচ্ছিলেন পবার পারিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সাইফুল বারি ভুলু। ওই সময় পেছন থেকে তাকে মারপিট শুরু করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনসুর রহমান। ওই সময় পাল্টা পেটাতে শুরু করেন ভুলু। মারামারির একপর্যায়ে ওই কক্ষে উপস্থিত অন্যরা দুইজনকেই ধরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। পরে ভুলু সেখান থেকে বের হয়ে চলে যান।
পূর্ব শত্রুতার জেরে এই মারপিটের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী। তারা বলছেন, সাইফুল বারী ভুলু গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তাছাড়া পবা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আটকাতে উচ্চ আদালতে রিট করেন তিনি। এনিয়ে এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির সঙ্গে তার দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এরই জেরে এ হামলা হয়েছে।
এ বিষয়ে পারিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল বারী ভুলু বলেন, আমি পাশের রুমে বসে অন্য চেয়ারম্যানদের সঙ্গে গল্প করছিলাম। এ সময় এমপি ডাকছে বলে একজন পিয়ন আমাকে ডেকে নিয়ে যান। রুমে ঢুকার পর এমপি আয়েন উদ্দিন তাকে গালাগালির অভিযোগে এনে ধমক দেন। তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে সেখান থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন। ওই সময় পেছন থেকে উপজেলা পরিষেদের চেয়ারম্যান তার ওপর হামলে পড়েন। পাল্টা তিনিও ঘুষি মেরে দেন।
ভুলুর অভিযোগ- এমপি আয়েন উদ্দিন ডেকে নিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করিয়েছেন।
তবে মারামারির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনসুর রহমান। তার দাবি, গালাগালি নিয়ে এমপি আয়েন উদ্দিন ও ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল বারী ভুলুর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে। এ নিয়ে সেখানে উত্তেজনা সৃষ্ট হয়।
এ বিষয়ে এমপি আয়েন উদ্দিন বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান ভুলুকে আমি ডেকে নিয়ে জিজ্ঞেস করি- আপনার বয়স হয়েছে আপনি আমাকে কেন গালাগালি করেন? তবে তিনি আমাকে গালাগালি করার কথা অস্বীকার করেন। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, আমাকেও গালাগালি করে ভুলু। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। তবে মারামারির মতো কোনো ঘটনা সেখানে ঘটেনি।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর/জেআইএম