বরিশালে ১০ লাখ টাকায় মেডিকেলের প্রশ্নপত্র!


প্রকাশিত: ০৫:৪৩ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫

সারাদেশে একযোগে মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তবে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যেও প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠেছে। এমনকি আগের হাতে পাওয়া প্রশ্নের সঙ্গে পরীক্ষা নেয়া প্রশ্ন মিলে গেছে বলেও দাবি করছে অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

সারাদেশের ন্যায় শুক্রবার বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজেও এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বরিশাল মেডিকেল কলেজ এবং মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২৪৩টি আসনের বিপরীতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয় ৩ হাজার ৫৪ জন পরীক্ষার্থী। পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রে এবং কেন্দ্রের বাইরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলেও কিছু শিক্ষার্থী আগের দিনই হাতে লেখা প্রশ্নপত্র পেয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। এমনকি ওই প্রশ্নপত্র শতভাগ মিলে গেছে বলেও দাবি করছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা।

নাম না প্রকাশের শর্তে নগরীর কালীবাড়ি রোডের এক শিক্ষার্থী জানান, পরীক্ষার আগের দিন তারা ৩ বন্ধু মিলে ১০ লাখ টাকার চুক্তিতে হাতে লেখা একসেট প্রশ্নপত্র পেয়েছেন। পরীক্ষায় শতভাগ মিলে যাওয়ার শর্তে পরীক্ষার পর টাকার লেনদেন হয়েছে বলেও জানায় সে।

ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রথমে হাতে লেখা প্রশ্নপত্র পেয়ে তেমন গুরুত্ব না দিলেও ওই প্রশ্নপত্র পরীক্ষায় শতভাগ মিলে যাওয়ার পর প্রশ্ন সরবরাহকারীদের উপর আস্থা বেড়েছে। ঢাকা থেকে কয়েক হাত ঘুড়ে তারা এই প্রশ্নপত্র পেয়েছে বলে জানায়।

পরীক্ষা দিয়ে সন্তুস্ট নয় উল্লেখ করে পরীক্ষার্থীরা জানায়, যারা প্রশ্নপত্র হাতে পেয়েছেন তারা হয়তো শতভাগ নম্বর পাবেন, কিন্তু যারা প্রশ্ন পায়নি অথচ ভর্তি পরীক্ষার জন্য হাড়ভাঙ্গা খাটুনী খেটেছে তারা এতে বঞ্চিত হবে। এতে মেধাবীরা মেডিকেল কলেজে ভর্তি থেকে ছিটকে পড়বে। আর ভর্তি হবে প্রশ্নপত্র কিনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা। এর ফলে মেধার প্রকৃত বিকাশ হবে না।

এসময় অনুষ্ঠিত এ পরীক্ষা বাতিল করে আরো সুষ্ঠু-সুন্দর এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নতুন করে মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

বরিশাল মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. ভাস্কর সাহা জানান, সুষ্ঠু-সুন্দর এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার জন্য সব ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ছিল। বরিশালে প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোন অভিযোগ তিনি পাননি। যদি এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদের খুঁজে বের করে শাস্তির মুখোমুখি করার দাবি জানান তিনি।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র সহকারী কমিশনার (গোয়েন্দা) আবু সাঈদ জানান, সারাদেশের সঙ্গে একযোগে বরিশাল মেডিকেল কলেজেও সুষ্ঠু-সুন্দর পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোন অভিযোগ কিংবা কোন তথ্য আমাদের কাছে নেই। এ ধরনের কোন অভিযোগ কিংবা তথ্য পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাইফ আমীন/আরএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।