হতাশ হয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেন ডিসি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঝালকাঠি
প্রকাশিত: ০৯:০৭ পিএম, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার ৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রোববার হঠাৎ পরিদর্শনে যান জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. জোহর আলী। তবে পরিদর্শনে গিয়ে হতাশ হয়েছেন তিনি। পরে রাতে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন জেলা প্রশাসক।

রোববার দিবাগত রাত ১২টা ১৮ মিনিটে দেয়া ওই স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘ঝালকাঠির ৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে খুবই মর্মাহত হই। একটি দাখিল মাদরাসার ২টি শ্রেণিতে একজন করে, একটিতে চারজন, একটিতে ছয়জন, একটিতে সাতজন এবং একটি শ্রেণিতে কোনো ছাত্রছাত্রী উপস্থিত পাওয়া গেলো না।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘চারজন শিক্ষকের একটি সরকারি প্রাইমারি স্কুলে মোট ছাত্রছাত্রী ৭২ জন। অন্য আর একটি স্কুলের অবস্থাও একই রকম। একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবস্থাও ভালো কিছু পেলাম না। ক্লাসের সময়ে ক্লাসে শিক্ষক না থাকায় ছাত্ররা বাইরে ঘোরাঘুরিতে ব্যস্ত। একটি সরকারি প্রাইমারি স্কুলে প্রধান শিক্ষককে পাওয়া গেলো না। শুনলাম তিনি কেনাকাটা করতে বরিশালে গেছেন। শিক্ষা অফিসার জানালেন তিনি কারও কাছ থেকে কোনো ছুটি/অনুমতি নেননি।’

জেলা প্রশাসক আরও লিখেছেন, ‘রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য জনগণের লাখ লাখ টাকা ব্যয় হচ্ছে। অথচ শিক্ষার হাল হলো এই। কী আর করা! দেখা যাক সকলে মিলে এর কিছুটা উন্নতি করা যায় কি-না?’ (পরিমার্জিত)

তার ওই স্ট্যাটাসের নিচে কমেন্টে ঝালকাঠি নাগরিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর (Ahmed Abu Jafor) লিখেছেন, ‘সরকারি বালক এবং বালিকা বিদ্যালয় দুটির প্রতি কঠোর নজরদারি দরকার। ক্লাশ হয় না, কোচিং হয়। যারা কোচিং করে না তারা স্কুলে যায় না।

রাজাপুর উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুল হাসান কমেন্ট করেন, ‘এদের পাবেন উপজেলা পরিষদের চত্বরে তৈলমর্দনে...।’

শহিদুল ইসলাম পলাশ নামের একজন লিখেছেন, ‘জেলার মফস্বলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা আরও করুণ। আশা করি আপনি জনস্বার্থে এই অভিযান অব্যাহত রাখবেন।’

ঝালকাঠি সরকারি কলেজের শিক্ষক মো. আব্দুল ওয়াদুদ জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানিয়ে কমেন্ট করেছেন, ‘এ ধরনের পরিদর্শন চলমান থাকুক এবং অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন, স্যার।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা প্রশাসক রোববার রাজাপুর উপজেলার আঙ্গারিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, জীবনদাসকাঠি দাখিল মাদরাসা, জীবনদাসকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছোট কৈবর্তখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী ওই ৭টি প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। পরে জেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওই ৭টি প্রতিষ্ঠান প্রধানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন।

মো. আতিকুর রহমান/এমবিআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।