বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একাই বক্তব্য দিলেন শামীম ওসমান
নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের এমপি শামীম ওসমান বলেছেন, নারায়ণগঞ্জের প্রশাসনের ভাইদের বলবো আপনারা শুদ্ধি অভিযান চালান প্রশাসনের ভেতরে। নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ মানেই আগুন নিয়ে খেলা। সুতরাং খেলবেন না। পারবেন না। জিয়া পারেনি, খালেদা জিয়া পারেনি, এরশাদও পারেনি। শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে বলেছেন, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে অন্যায় আচরণ হলে কাউকে ছাড় দেব না। আমি সেই শেখ হাসিনার কর্মী। নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী কাউকে ভয় করে রাজনীতি করে না। নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগকে নিয়ে কেউ খেলা করতে পারবেন না। নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অসম্মান করলে সে যদি মন্ত্রীও হয় ছাড় দেব না।
শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের মিশনপাড়ায় সলিমুল্লাহ সড়কে ‘রুখে দাঁড়াও স্বাধীনতাবিরোধী সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে’ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে শামীম ওসমান বিকেল থেকে সন্ধ্যা এক ঘণ্টারও বেশি সময় বক্তব্য রাখেন।
তিনি আরও বলেন, বাবা-মায়ের পর যদি কাউকে মানি কারও জন্য জীবন দিতে পারি তিনি হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ’৭৫ এর পর যারা রাজনীতিতে এসেছি আমরা শেখ হাসিনাকে স্বপ্নের মা, রাজনৈতিক মা মনে করি।
তিনি বলেন, আজকের সমাবেশে অন্য কোনো সাবজেক্ট নয়। গত কোরবানির ঈদে মাংস বিতরণের নামে একটি এনজিও রোহিঙ্গাদের মাঝে অস্ত্র বিতরণ করেছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহা নামের এক নারী গিয়ে অনেক কিছু বলে আসছে। ড. কামাল, মির্জা ফখরুলরা বিদেশিদের জন্য মিটিং করছেন। এটা যখন শুনলাম তখনই এ সভার প্রস্তুতি নিলাম।
শামীম ওসমান বলেন, ‘আমি আল্লাহ ছাড়া কারও ওপর ভরসা করি না। আজকের সমাবেশ নিয়ে অনেকে প্রশ্ন কার বিরুদ্ধে সমাবেশ? এমন কোনো কাজ শামীম ওসমান করবে না যাতে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। কখন কোথায় কথা বলতে হয় আমি জানি। সংসদে ইকবাল সোবহান চৌধুরীর বিরুদ্ধেও কথা বলেছি।’
শামীম ওসমান বলেন, জেলা প্রশাসক বলেছেন স্বাধীনতাবিরোধী কেউ যাতে পুলিশে ঢুকতে না পারে। কথাটি আমার ভালো লেগেছে। কিন্তু সেখানে শুধু পুলিশ না কোনো জায়গায়ই যেন প্রবেশ করতে না পারে।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপারকে ডেকেছিলাম। অনেক চৌকশ পুলিশ অফিসার। সিদ্ধিরগঞ্জের ঘটনার পর আমি কথা বলেছিলাম। ঘটনা ঘটেছে ১নং ওয়ার্ডে। ৭৫ জনের নাম উল্লেখসহ ৪৯৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হলো। তাদের সকলেই আওয়ামী লীগের সাচ্চা কর্মী ও ব্যবসায়ী। সিদ্ধিরগঞ্জ হলো নারায়ণগঞ্জের গোপালগঞ্জ। পুলিশ সুপার আশ্বাস দিয়েছেন নিরপরাধ কাউকে হয়রানি করা হবে না। অতি উৎসাহী পুলিশ অফিসার ষড়যন্ত্র করছেন। অনেক পুলিশ অফিসার অনেক নেতার বিরুদ্ধে নিউজ করতে সাংবাদিকদের কারও কারও টেক্সট করে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা এখন চাইলে নারায়ণগঞ্জকে অবরুদ্ধ করতে পারি। সুতরাং আমাদের সঙ্গে খেলবেন না। কাকে খেলা শেখাবেন। আমরা তো অনেক ছোটবেলার খেলোয়াড়।
এদিকে সমাবেশকে সফল করার লক্ষ্যে দুপুর ৩টার পর থেকে ফতুল্লা, বন্দর, সিদ্ধিরগঞ্জ ও শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে সমাবেশে হাজির হতে শুরু করেন।
সমাবেশে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি বাবু চন্দনশীলের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মোহাম্মদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি খোকন সাহা, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফউল্লাহ বাদল, সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া, বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম রশিদ, শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন সাজনু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হক নিপু, ফতুল্লা থানা যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেল, ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ফরিদ আহম্মেদ লিটন, ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু মোহাম্মদ শরীফুল হক প্রমুখ।
শাহাদাত হোসেন/এমএএস/এমএস