বাবার অপরাধে ১১ মাসের শিশুর ১৯ ঘণ্টা হাজতবাস


প্রকাশিত: ০৭:৩৪ এএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫

১১ মাস বয়সের শিশু রয়েলের বাবা রাজু আহম্মদকে আটক করতে না পেরে মায়ের সঙ্গে শিশুটিকে আটক করে থানা নিয়ে আসে পুলিশ। এরপর প্রায় ১৯ ঘণ্টা তাদের হাজতে আটকে রাখা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের মহেশপুরে।

পরিবারের দাবি, পুলিশকে ৪২ হাজার টাকা দিয়ে মুক্তি পেতে হয়েছে। অবশ্য পুলিশ এ ব্যাপারে স্পষ্ট কিছুই বলছেন না। শুধু এ টুকুই বলছে বিষয়টি নিয়ে পরে কথা হবে।

রাজু আহম্মদ জানান, তার নামে আগে একটি মামলা ছিল। যে মামলায় তিনি ১৬ দিন আগে আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। তিনি আরো জানান, বুধবার রাতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে একই উপজেলার লাটিমা গ্রামে আব্দুল আজিজ নামের এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। রাত ৮ টার দিকে ওই বাড়িতে পুলিশ আসে। পুলিশ তার নাম ধরে খোঁজ করতে থাকলে তিনি অবস্থা বুঝে দৌঁড়ে পালিয়ে যান।

এদিকে মহেশপুর থানার টিএসআই আমির হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ তাকে তাড়া করে আটক করতে না পেরে তার স্ত্রী আর ১১ মাসের শিশুকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। আটকের সময় তার স্ত্রীকে মারপিট করা হয়েছে। কোনো নারী পুলিশ না থাকায় পুরুষ পুলিশরা তাকে মারপিট করেছে। এরপর তাদের টেনে হিচড়ে গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে যান।

রাজু আহম্মদ আরো জানান, বুধবার রাতে হাজতে আটকে রেখে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হয় টাকার দাবি। পুলিশের ওই কর্মকর্তা মা-ছেলেকে ছাড়তে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এই টাকা না দিতে পারায় দুপুর পর্যন্ত তাদের আটকে রাখেন। এক পর্যায়ে ৪২ হাজার টাকা দিয়ে দুপুর ৩ টার দিকে তাদের মুক্ত করেন।

তিনি জানান, ধার দেনা করে টাকার জোগাড় করে তার চাচা আব্দুল আজিজ এর হাত দিয়ে এই টাকা পৌঁছে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে আব্দুল আজিজ জানান, তিনি বৌমাকে ছাড়াতে থানায় গেলে পুলিশ টাকার প্রস্তাব দেন। রাজু মুঠোফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে টাকার চুক্তি করেন। পরে টাকার জোগাড় করে তার হাতে দিলে তিনি রাতে আটক করতে যাওয়া ওই কর্মকর্তার হাতে তুলে দেন।

এ ব্যাপারে টিএসআই আমির হোসেন জানান, রাজু আহম্মদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। যে কারণে তাকে আটক করতে যান। পুলিশ দেখে রাজু পালিয়ে যান। এরপর তার স্ত্রীকে একা অন্যের বাড়িতে রেখে আসলে কেমন হয় তাই নিরাপত্তার জন্য থানায় নিয়ে আসেন। হাজতে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিরাপত্তার জন্যই রাখা হয়েছে। আর ৪২ হাজার টাকা দিয়ে মুক্তি পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি পরে কথা বলবেন বলে জানান। বার বার প্রশ্ন করলেও তিনি ব্যস্ততার অজুহাতে এড়িয়ে যান।

অবশ্য মহেশপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিদুল ইসলাম শাহিন জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, তারা স্বামী-স্ত্রী ওই বাড়িতে অবস্থানকালে এলাকার লোকজন খারাপ ধারণা করে আটক করেন। তারা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ সেখানে গিয়ে দেখেন ছেলেটি পালিয়ে গেছে। মেয়েটিকে থানায় নিয়ে আসেন। পরে তারা স্বামী-স্ত্রী জানতে পেরে ছেড়ে দেন। এখানে টাকা পয়সার কোনো লেনদেন নেই বলে তিনি দাবি করেছেন।

এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।