শিক্ষককে পেটালেন ইউপি চেয়ারম্যান

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি গোপালগঞ্জ
প্রকাশিত: ১২:৩০ পিএম, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈর বিরুদ্ধে অমূল্য রতন হালদার নামে এক শিক্ষককে পেটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে ওই শিক্ষক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের ধারাবাশাইল বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

আহত অমূল্য রতন হালদার কান্দি ইউনিয়নের গজালিয়া গ্রামের মহেন্দ্রলাল হালদারের ছেলে ও গজালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) উপজেলার মাচারতারা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের সবুজ ঘরামী নামে দশম শ্রেণির এক ছাত্রকে শ্রেণি কক্ষে পড়া না পারার কারণে গণিত শিক্ষক আশীষ চন্দ্র বড়াল মারধর করেন। এ ঘটনা নিয়ে সবুজ ঘরামীর পরিবারের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র হালদার সবুজ ঘরামীর পরিবারকে চেপে যেতে বলেন। ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈর স্ত্রী জেলা পরিষদ সদস্য রীনা রাণী মন্ডল। ঘটনাটি সবুজ ঘরামীর বাবা সুশীল ঘরামী রীনা রাণী মন্ডলকেও জানান। এ বিষয়টি নিয়ে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ধারাবাশাইল বাজারে ইউপি চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ ও নারায়ণ চন্দ্র হালদারের ভাইয়ের সঙ্গে গজালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অমূল্য রতন হালদারের কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ ও তার ভাই মনি বাড়ৈ শিক্ষক অমূল্য রতন হালদারকে মারধর করেন।

শিক্ষক অমূল্য রতন হালদার বলেন, চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ তার ভাই মনিকে সঙ্গে নিয়ে আমাকে মারপিট করে আমার কপালে তার পায়ের স্যান্ডেল লাগিয়ে বলেন- তুই আমার স্যান্ডেলেরও যোগ্য না। বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোকে ও তোর ভাইকে দেখে নিব।

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ বলেন, আমি শিক্ষক অমূল্য হালদারকে মারধর করিনি। অমূল্য হালদার মাচারতারা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের বিষয়টি নিয়ে আমার মা-বাবা তুলে গালিগালাজ করেছে। তখন আমার ভাই মনির সঙ্গে তার একটু হাতাহাতি হয়।

ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, অমূল্য রতন হালদার শিক্ষক হলেও এলাকায় একজন খারাপ প্রকৃতির লোক। তার বিরুদ্ধে এলাকার লোকজন কয়েক মাস আগে থানায় জিডি করেছে। এছাড়া অমূল্য রতন হালদারের ভাই মাচারতারা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র হালদার বিদ্যালয়টিতে দুর্নীতি আখড়ায় পরিণত করেছেন। বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমার স্ত্রী রীনা রাণী মন্ডল এর প্রতিবাদ করায় এই শিক্ষকের দুই ভাই আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে নানা ধরনের মিথ্যা রটাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে মাচারতারা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র হালদার বলেন, চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈর সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তিনি তার ক্ষমতাবলে এলাকায় রামরাজত্ব কায়েম করেছেন।

কোটালীপাড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ লুৎফর রহমান বলেন, উভয়পক্ষ থেকেই অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।