‘দেশে ধর্ষণের মহোৎসব চলছে’
নারী ও শিশুর প্রতি একের পর এক যৌন সহিংসতার প্রতিবাদে বরিশালে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে নগরীর সদর রোড অশ্বিনী কুমার হলের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনের আয়োজন করে নারীপক্ষ ও বরিশাল মহিলা কল্যাণ সংস্থা। এতে সভাপতিত্ব করেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর কোহিনুর বেগম।
বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের বরিশাল শাখার যুগ্ম সম্পাদক প্রতিমা সরকার, এসইউভিও’র নির্বাহী পরিচালক হাসিনা বেগম নীলা, বিএসডিপির প্রতিনিধি মো. জাহিদুল ইসলাম, তারুণ্যের কণ্ঠস্বর প্ল্যাটফর্মের সদস্য ইশতিয়াক আহমেদ রাব্বী ও বিএমকেএস’র পরিচালক কাওছার পারভীন প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ছয় মাসে সারাদেশে ৬৩০ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। যার মধ্যে গণধর্ষণের শিকার ১৫৩ জন। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৩৭ জনকে এবং ধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন সাতজন। ১০৫ জন নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। যার মধ্যে একজন আত্মহত্যা করেছেন এবং একজনকে হত্যা করা হয়েছে। যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ১২৭ জন। এর মধ্যে আটজন আত্মহত্যা করেছেন। ধর্ষণের প্রতিবাদ করায় খুন হয়েছেন তিনজন নারী এবং দুজন পুরুষ।
বক্তারা আরও বলেন, নারীর ওপর সহিংসতা দমনে রাষ্ট্র এতটাই ব্যর্থ যে সহিংসতা এখন মহামারি আকার ধারণ করেছে। শিশু থেকে বৃদ্ধা, সব বয়সের নারী যৌন সহিংসতা ও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। শিশুরাও বলাৎকার থেকে রেহাই পাচ্ছে না। যেন দেশে ধর্ষণ ও ধর্ষণ করে হত্যার মহোৎসব চলছে। ঘরে-বাইরে, রাস্তা-ঘাটে, যানবাহনে, কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ, ধর্ষণের পর হত্যা, ধর্ষণচেষ্টা বা যৌন হয়রানি, উত্ত্যক্ত করা, এসিড আক্রমণসহ নানাবিধ সহিংসতার শিকার হচ্ছে নারী ও শিশু। পরিবার, সমাজ, এমনকি রাষ্ট্র এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তির কাছেও নিরাপদ নয় নারীরা।
হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়ন, দ্রুত বিচার নিশ্চিতকরণ এবং জাতীয় পর্যায়ে কমিটি গঠন করে নারীর প্রতি সহিংসতা, যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণ-সংক্রান্ত আইন বাস্তবায়নের অগ্রগতি এবং প্রতিবন্ধকতা নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও যথাযথ নির্দেশ দিতে সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানান বক্তারা। সেই সঙ্গে নারীকে যথার্থ সম্মান প্রদান ও দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযুক্তদের উপযুক্ত শাস্তির মাধ্যমে বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করার দাবি জানান তারা।
সাইফ আমীন/এএম/এমএস