সিলেটে একমাস ধরে আপেল আমদানি বন্ধ : বিপাকে ব্যবসায়ীরা


প্রকাশিত: ০২:৩৩ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫

সিলেট সীমান্ত এলাকার শুল্ক স্টেশনগুলো দিয়ে এক মাস ধরে ভারত থেকে ফল আমদানি বন্ধ রয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, এ মৌসুমে সবচেয়ে বেশি আমদানি হয় আপেল। তবে চলতি মৌসুমে আমদানি শুরুর সপ্তাহখানেক পর বন্ধ হয়ে যায় আপেল আমদানি। ফলে বিপাকে পড়েছেন আমদানিকারকরা।

শুল্ক স্টেশন দিয়ে আমদানি বন্ধ থাকায় সিলেটে বাড়তে শুরু করেছে আপেলের দামও। এক মাস আগে সিলেটে প্রতি কেজি আপেল ৯৫ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট অফিস সূত্রে জানা যায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবছর ৬ চাকার ট্রাকে করে সর্বনিম্ন ১৪ টন, ১০ চাকার ট্রাকে করে সর্বনিম্ন ১৮ টন ও ১২ চাকার ট্রাকে করে ২০ টন ফল আমদানির নির্দেশনা দেয়। শুল্ক ফাঁকি এড়াতে এনবিআরের পক্ষ থেকে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়।

সিলেটের ফল আমদানিকারকরা জানান, এমন নির্দেশনার কারণে লোকসানের মুখে পড়েছেন আমদানিকারকরা। তারা জানান, সিলেটের শ্যাওলা শুল্ক স্টেশন দিয়েই বেশিরভাগ ফল আমদানি হয়। আপেল সাধারণত ভারতের দিল্লি থেকে আমদানি করা হয়ে থাকে। দিল্লি থেকে আপেল আসে আসামে। আসামের রফতানিকারকদের কাছ থেকে সিলেটের আমদানিকারকরা আপেল কিনে থাকেন।

তবে আসাম থেকে শ্যাওলা স্থল বন্দরের রাস্তা উঁচু নিচু হওয়ায় এই পাহাড়ি সড়ক দিয়ে ৬ চাকার ট্রাকে করে ১০ টনের বেশি আপেল পরিবহন সম্ভব হয় না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

সিলেটের আপেল আমদানিকারক আবুল কালাম জানান, সিলেটের শুল্ক স্টেশনগুলোর মধ্যে ভারতের সাথে শ্যাওলা শুল্ক স্টেশন দিয়েই সড়ক যোগাযোগ সবচেয়ে ভালো। তাই ফলমূল এই স্টেশন দিয়েই আমদানি করা হয়। কিন্তু এই সড়ক পাহাড়ি ও উঁচুনিচু হওয়ায় ৬ চাকার ট্রাকে ১০ টনের বেশি আপেল আমদানি সম্ভব হয় না। অথচ ১০ টন আপেল আমদানি করলেও ১৪ টনের শুল্ক দিতে হয়।

তিনি বলেন, এনবিআরের নির্দেশনার কারণে এখন কেউ একটন আপেল আমদানি করলেও ১৪ টনের শুল্ক দিতে হয়। এ কারণে আমদানিকারকরা লোকসানে পড়েছেন। তাই তারা আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন।

কালাম বলেন, দেশের অন্যান্য শুল্ক স্টেশনের জন্য এই নির্দেশনা জারির যৌক্তিকতা থাকলেও সিলেটের সঙ্গে আসামের ভৌগলিক অবস্থা বিবেচনা এখানে তা শিথিল করা প্রয়োজন।

সিলেটের ফল আমদানিকারকরা জানান, আগস্ট মাসের ১১ তারিখ থেকে শ্যাওলা শুল্ক স্টেশন দিয়ে আপেল আমদানি বন্ধ রয়েছে। এরআগে চলতি মৌসুমে ৭/৮ দিন এই স্টেশন দিয়ে আপেল আমদানি হয়।

এদিকে সিলেটের ফলমূলের খুচরা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, গত মাসে কেজি প্রতি আপেলের দাম প্রায় ৫০ টাকা বেড়ে গেছে। আগস্টের শুরুর দিকে প্রতি কেজি আপেল ৮০ টাকা দরে বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা।

এ ব্যাপারে সিলেট ফল আমদানিকারক সমিতির সভাপতি বশির মিয়া বলেন, আমরা এই নির্দেশনা শিথিল করার জন্য এনবিআরের কাছে আবেদন করেছি। স্বল্প পরিমাণ পণ্য আমদানি করে অধিক পরিমাণের জন্য শুল্ক দিতে হলে কারোপক্ষেই আপেল আমদানি সম্ভব হবে না।

কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, সিলেট অফিসের সহকারী কমিশনার মো. বায়েজিদ আহমদ শ্যাওলা শুল্ক স্টেশন দিয়ে আপেল আমদানি বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, এই দিককার সড়ক অসমতল। তাই এখানকার আমদানিকারকরা কিছু ছাড় চাচ্ছিলেন। কিন্তু আমাদের তো এনবিআরের নির্দেশনার বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। তাই আমদানিকারকরা কমলা আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন।

মো. বায়েজিদ আহমদ বলেন, তারা চাইলে নির্দেশনা মেনে যে কোনো সময় থেকেই আমদানি শুরু করতে পারেন। আমাদের কোনো আপত্তি নেই।

ছামির মাহমুদ/ এমএএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।