বন্ধ হলো সিলেটের ঐতিহাসিক কিন ব্রিজে যান চলাচল
সিলেট নগরের ঐতিহাসিক কিন ব্রিজ সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য রোববার (১ সেপ্টেম্বর) থেকে এই সেতু দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করা দেয়া হয়েছে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই সেতুটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সে কারণে সংস্কারের জন্য এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রায় শতবর্ষী এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন সুরমা নদী পার হয় অসংখ্য যানবাহন। ফলে সেতুর বিভিন্ন স্থানে গর্ত হওয়ায় যান চলাচল অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় ঐতিহাসিক এই স্থপনাটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সংস্কার কাজের জন্য আজ (রোববার) থেকে এই সেতু দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে এ সময়ে পথচারীরা হেঁটে পারাপার হতে পারবেন।
এ ব্যাপারে সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজ জানান, ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়া ঐতিহাসিক কিন ব্রিজটি মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ জন্য রোববার থেকে এই সেতুতে রিকশাসহ সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকবে। সিটি কর্পোরেশন, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ এবং পুলিশ (ট্রাফিক বিভাগ) যৌথভাবে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংস্কার কাজ শেষ হলে এটি যানবাহন চলাচলের জন্য ফের খুলে দেয়া হতে পারে।
ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে ব্রিটিশ শাসনামলের এই সেতুটি সংরক্ষণের জন্য এর উপর দিয়ে যান চলাচল একেবারেই বন্ধ করে দেয়ার বিষয়টিও ভাবা হচ্ছে বলে জানান তিনি। সেই সঙ্গে পর্যায়ক্রমে সিলেট নগরের শেখঘাট এলাকায় সুরমা নদীর উপর নির্মিত কাজিরবাজার সেতুটি সব ধরনের যান চলাচেলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হতে পারে।
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯৩৩ সালে সুরমা নদীর ওপর কিনব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। নির্মাণ শেষে ১৯৩৬ সালে সেতুটি আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেয়া হয়। আসাম প্রদেশের তৎকালীন গভর্নর মাইকেল কিনের নামে এই সেতুর নাম রাখা হয়
কিন ব্রিজ।
দৃষ্টিনন্দন লোহার পাটাতনের ওপর লাল রং দেয়া সেতুটির অবকাঠামো দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষে সিলেট শহর থেকে পাক সেনারা পালিয়ে যাওয়ার সময় সিলেটে প্রবেশের এই ঐতিহাসিক স্থাপনায় মাইন বিস্ফোরণ ঘটালে এর একাংশ ধসে যায়।
দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধুর তৎকালীন সরকার এটি পুনঃনির্মাণ করে। বলা হয়ে থাকে সিলেটকে চেনার অন্যতম নিদর্শন হচ্ছে ঐতিহাসিক কিনব্রিজ ও এর পাশে থাকা আলী আমজদের ঘড়ি।
ছামির মাহমুদ/এমএমজেড/পিআর