তাওহিদাও চলে গেল, বাবা-মাও নিঃস্ব হলো
পরিবারের সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেল ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশু তাওহিদা আক্তার (৯)। পরিবারের বড় মেয়ে মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চলে যাওয়া মানতে পারছেন না তার বাবা ও মা।
শুক্রবার সকালে সিলেট রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে সে। তাওহিদা সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার রাধানগর গ্রামের আলী হোসেন মজনু ও মাসকুরা বেগমের বড় মেয়ে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকেলে আসরের নামাজের পর তাওহিদার জানাজা সম্পন্ন করে তাকে দাফন করা হয়েছে। তাওহিদার বাবা গেল ২০ আগস্ট কাতার থেকে ফিরে আসেন মেয়ের চিকিৎসা করাতে। কিন্তু বাঁচাতে পারলেন না মেয়েকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তাওহিদার বাবা আলী হোসেন দেশে ফিরে বড় মেয়ের চিকিৎসার জন্য বাড়ি ও জায়গা বিক্রি করে দেন তিনি। তাছাড়া বিদেশে উপার্জন করা টাকা প্রায় সবকিছুই মেয়ের চিকিৎসায় ব্যয় হয়েছে। এখন আদরের বড় মেয়েকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন বাবা আলী হোসেন ও মা মাসকুরা বেগম।
এদিকে শিশু তাওহিদার মৃত্যুর সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পুরো সুনামগঞ্জে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এ ঘটনায় তাওহিদার চিকিৎসার পেছনে সর্বস্ব হারানো পরিবারের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন অনেকে।
স্থানীয় বাসিন্দা মনির আহমেদ বলেন, তাওহিদার মৃত্যু আমাদের অনেক কষ্ট দিয়েছে। ফুটফুটে শিশুটি মাত্র ৯ বছর বয়সে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেল। তাওহিদার বাবা কিছুদিন আগে দেশে আসেন মেয়ের চিকিৎসা করানোর জন্য। এজন্য তিনি ভিটেমাটি বিক্রি করে দেন। এখন আমাদের উচিত তাওহিদার পরিবারকে সাহায্য করা।
প্রসঙ্গত, ১৯ জুন জাগোনিউজ২৪.কমে ‘উদ্যোগ নিলেই বেঁচে যাবে তাওহিদা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। ওই সময় সংবাদ প্রকাশের পর দেশ বিদেশ থেকে পরিবারের কাছে বেশ কিছু ফোন এলেও খুব বেশি সহযোগিতা পায়নি তার পরিবার।
মেডিকেলে ভর্তি থাকাবস্থায় তাওহিদার মা মাসকুরা বেগম বলেছিলেন, সরকারিভাবে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করতে হলে ৮ লাখ টাকার প্রয়োজন। তাছাড়া প্রতি মাসেই তাওহিদার শরীরের রক্ত পরিবর্তন করতে হচ্ছে।
মোসাইদ রাহাত/এমএএস/পিআর