সিলেটে ডাকাতির দায়ে ৪ জনের যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক সিলেট
প্রকাশিত: ০৬:৪৪ পিএম, ২৯ আগস্ট ২০১৯

সিলেটের বালাগঞ্জে ডাকাতির দায়ে চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া এ মামলার অপর ছয় আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৫ আদালতের বিচারক (ভারপ্রাপ্ত) মোছাম্মৎ রোকসানা বেগম হেপী এ রায় দেন।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থানার শিববাড়ি শংঙ্কর সেন এলাকার মৃত আব্দুল হাসিমের ছেলে ফুল মিয়া (৪২), একই থানার তাপসী পাড়ার রতিস দাসের ছেলে রণজিৎ দাস (৪৫), সিলেটের বালাগঞ্জ থানার শাহাপুর গ্রামের আব্দুল মতলবের ছেলে আব্দুস শহিদ (৩২) ও একই গ্রামের গোলাম রব্বানীর ছেলে বাদল মিয়া (৩৫)। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে রণজিৎ পলাতক রয়েছেন। আর অন্যরা সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক আছেন।

খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- মৌলভীবাজারের রাজনগর থানার টিলাগাঁও গ্রামের মৃত নিজাম উদ্দিনের ছেলে টুনু মিয়া (৩২), মাঈন উদ্দিনের ছেলে আলী আফজল (৪৫), কালু মিয়ার ছেলে রুমন (২২), বাদশা মিয়ার ছেলে সুজন (৩০) , আজমল মিয়ার ছেলে সাইদুল (২৮) ও রাজনগর আব্দুল্লাপুর গ্রামের মো. সফিক মিয়ার ছেলে মো. আবু বক্কর (৩৪)।

আদালত সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ২৪ আগস্ট রাত আড়াইটায় সিলেটের বালাগঞ্জের হামছাপুর গ্রামের আব্দুল বারীর ছেলে মো. শাহজাহান আহমদের বাড়িতে ডাকাত দল হানা দেয়। তারা বাড়ির কেচি গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় শাহজাহান দেখে ফেললে ডাকাতরা তাদের হাতে থাকা শাবল ও রামদা দিয়ে তাকে কুপিয়ে জখম করে। ঘরে প্রবেশের পর ডাকাত দল নারী, শিশু ও পুরুষদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। তখন শাহজাহানের চাচা ওয়ারিছ আলী ডাকাতদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করলে ডাকাতরা তাকেও কুপিয়ে জখম করে। এ সময় সবাইকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ডাকাত দল ঘরে থাকা স্বর্ণের গহনা, নগদ টাকা, দামি কাপড় ও আসবাবপত্র, দুটি মোবাইল ফোনসহ ২ লাখ ৫৩ হাজার ৯৫০টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় শাহজাহান আহমদ বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে ও ৬/৭ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বালাগঞ্জ থানায় মামলা করেন। মামলা তদন্তাকালীন সন্দেহমূলকভাবে গ্রেফতার করা হয় বাদলকে। গ্রেফতারের পর বাদলকে শনাক্ত করেন শাহজাহান। ডাকতির সঙ্গে জড়িত মর্মে ২৯ আগস্ট বাদল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

পরে তাঁর দেখানো মতে ডাকাতিকালে লুণ্ঠিত ১ লাখ ৩৯ হাজার ৭৫০ টাকার মালামাল উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে এজাহার নামীয় ও অপর আসামিদের গ্রেফতার করে পুলিশ। আর তদন্ত শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বালাগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই মো. কামরুজ্জামান ১০ জনকে অভিযুক্ত করে ওই বছরের ২৮ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র (নম্বর-৯১) দাখিল করেন।

আদালত ২০১৬ সালের ৬ জানুয়ারি ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে মামলার বিচার কার্য শুরু করেন। আদালতে দীর্ঘ শুনানি ও ২১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে রায় ঘোষণা করেন।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৫ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট এসএম পারভিন জানান, বালাগঞ্জ উপজেলার ডাকাতির ঘটনায় চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ছয় আসামির বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেয়া হয়েছে।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ফুলু মিয়ার আইনজীবী শফিকুল ইসলাম বলেন, আমার মক্কেল ন্যায় বিচার পাননি। তাই এ রায়ের বিপক্ষে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।

ছামির মাহমুদ/আরএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।