ভাঙছে পদ্মা, ঝুঁকিতে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট
পদ্মা নদীর স্রোত বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন দেখা দিয়েছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি স্থানে। গত কয়েকদিনের ভাঙনে দৌলতদিয়ার ধল্লাপাড়া ও দেবগ্রামের কাউয়াজানির মুন্সি পাড়াসহ ইউনিয়ন দুটির বিভিন্ন স্থানের শতশত একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে রাস্তা-ঘাট, বাজার, কবর স্থান, স্কুল, ক্লিনিক, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও শতশত বসতবাড়ি।
এদিকে এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিরা বলছেন এখনই এ এলাকার ভাঙন রোধ করতে না পারলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে দৌলতদিয়া লঞ্চ ও ফেরিঘাট। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই কম বলে অভিযোগ তাদের।
ভাঙন কবলিত এলাকায় গিয়ে জানা গেছে, গোয়ালন্দ উপজেলা ৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। যার ৩টি ইউনিয়নই ভাঙন কবলিত। গত কয়েকদিনে পদ্মার তীব্র স্রোত আর ঢেউয়ে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে শত শত একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। জরুরি স্থায়ী ব্যবস্থা না নিলে ভাঙনে ছোট হয়ে যাবে ইউনিয়ন দুটির মানচিত্র।
এদিকে ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে দুইটি প্যাকেজের মাধ্যমে ১২ হাজার ৮০০ জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করেছে। তবে ভাঙন এলাকায় প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত কম জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
স্থানীয়রা বলেন, তাদের অনেকের বাড়ি এখন পর্যন্ত ২ থেকে ৬ বার নদীতে ভেঙেছে। এখন তারা দিশেহারা। নতুন করে আবার ভাঙলে কোথায় যাবেন। ভাঙন ঠেকাতে বালুর বস্তা ফেলা শুরু হয়েছে, কিন্তু লাভ কী? ভাঙছে অনেক জায়গায়, আর বস্তা ফেলা হচ্ছে দু-একটি জায়গায়। এছাড়া যে পরিমাণ বস্তা ফেলা দরকার সে পরিমাণ ফেলা হচ্ছে না। এভাবে ভাঙন ঠেকানো যাবে না। তারা ভাঙন ঠেকাতে এবং স্থায়ীভাবে নদী শাসনের জন্য স্থানীয় এমপি কাজী কেরামত আলীসহ প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম মন্ডল বলেন, ভাঙন ঠেকাতে কাজ শুরু হয়েছে, কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত কম। ভাঙন ঠেকাতে বেশি বেশি জিও ব্যাগ ফেলতে হবে। ভাঙনে দিন দিন ছোট হয়ে আসছে উপজেলার মানচিত্র। তাই এখনই স্থায়ীভাবে নদী শাসন হওয়া প্রয়োজন।
গোয়ালন্দ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আরিফ সরকার বলেন, উপজেলার দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। সেই ভাঙন রোধে ২৭ আগস্ট থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে দুইটি প্যাকেজের মাধ্যমে জরুরি আপদকালীন প্রতিরক্ষামূলক কাজ শুরু করেছে। দুইটি প্যাকেজে প্রায় ১২ হাজার ৮০০ জিও ব্যাগ ফেলা হবে।
রুবেলুর রহমান/এফএ/জেআইএম