সাড়ে ৪ বছর পর মায়ের কাছে ফিরল যুথি
আমেনা খাতুন যুথির বয়স তখন ৬ বছর। দুরন্ত শৈশব। কিন্তু তার সেই শৈশব বাবা-মায়ের বিচ্ছেদে শেষ হয়ে গেছে। এরই মাঝে পেরিয়েছে দীর্ঘ সময়। শেষ পর্যন্ত মায়ের কাছে ফিরেছে যুথি। বুধবার মা সালমা খাতুনের সঙ্গে বাড়ি ফিরেছে আমেনা খাতুন যুথি (১২)। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার লাঙ্গলকোট উপজেলায়। বাবার নাম আব্দুস সাত্তার।
জানা গেছে, বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সৎমায়ের অত্যাচার থেকে বাঁচতে ছয় বছরের যুথি চাচার সঙ্গে ঢাকায় পাড়ি জমায়। ওই বয়সে গৃহপরিচারিকার কাজ জোটে তার। কিন্তু অত্যাচার-নিপীড়ন পিছু ছাড়েনি যুথির। দুই বছর সেখানেই কাটে তার দুঃসময়। গৃহকর্তার অমানবিক আচরণে প্রাণ বাঁচাতে ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি পালিয়ে যায়। রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে উঠে রাজশাহীগামী ট্রেনে। ট্রেনে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদেছে অভিভাবকহীন মেয়েটি। এই দৃশ্য চোখ এড়ায়নি এক সুহৃদ ট্রেন যাত্রীর। তিনি রাজশাহী পৌঁছে তাকে নিয়ে যান নগর পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে। ওইদিন থেকে (৮ জানুয়ারি ২০১৯) যুথির আশ্রয় হয় রাজশাহীর মানবাধিকার সংস্থা ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডি’র শেল্টার হোমে।
বুধবার বিকেলে আমেনা খাতুন যুথিকে তার পরিবারের হাতে তুলে দেয়ার পর এসিডি’র শেল্টার হোম ম্যানেজার পুষ্প রানী বিশ্বাস বলেন, শেল্টার হোমে আসার পর থেকেই সে বাড়ি না ফেরার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু তিন-চার মাস ধরে মায়ের কাছে যাওয়ার বায়না ধরে। পরে রাজশাহী ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার তার মায়ের সন্ধান পায়। বুধবার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার থেকেই মায়ের সঙ্গে বাড়ি ফেরে সে। এ সময় তার পরিবারের অন্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর/পিআর