শ্লীলতাহানির অপমানে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা, অভিযুক্ত গ্রেফতার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুষ্টিয়া
প্রকাশিত: ০৮:৩৮ পিএম, ২৮ আগস্ট ২০১৯

কুষ্টিয়ায় শ্লীলতাহানির অপমান সইতে না পেরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহননের পথ বেছে নেয় নবম শ্রেণির ছাত্রী ফাহিমা। এ ঘটনায় বুধবার বিকেলে তার আত্মহত্যায় প্ররোচনায় অভিযুক্ত অটোরিকশা চালক সুজ্জলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলার জগতি এলাকায় শ্লীলতাহানির সামাজিক বিচার না পেয়ে ফাহিমা নিজ ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।

নিহত ফাহিমা খাতুন ওই এলাকার ফারুক খানের মেয়ে এবং বাড়াদী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। এ ঘটনায় নিহতের বাবা ফারুক খান বাদী হয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে অটোরিকশা চালক সুজ্জলকে আসামি করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেন। গ্রেফতার সুজ্জল একই এলাকার বদর শাহের ছেলে। তার দুই স্ত্রী ও এক সন্তান রয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে যাতায়াতের পথে ফাহিমাকে উত্ত্যক্ত করত সুজ্জল। মঙ্গলবার সকালে ফাহিমা প্রতিবেশীর বাড়িতে দুধ আনতে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে সুজ্জল তার গায়ে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। বিষয়টি বাড়িতে এসে পরিবারের লোকজনকে জানায় ফাহিমা। এরপর ফাহিমা যথারীতি স্কুলে যায়। স্কুল থেকে বেলা সাড়ে ১০টার দিকে মা সুফিয়া বেগম মেয়ে ফাহিমাকে ডেকে এনে সুজ্জলের বাড়িতে গিয়ে বিচার চাইলে সুজ্জলের পরিবারের লোকজন অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজসহ চরম অপমান করে বাড়ি থেকে তাদের বেড় করে দেন। প্রকাশ্যে এমন অপমান সইতে না পেরে সেখান থেকে দৌড়ে বাড়িতে এসে নিজ ঘরের শয়ন কক্ষে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাহিমা আত্মহত্যা করে।

বাড়াদি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরিফুর রহমান বলেন, ফাহিমা মঙ্গলবারও স্কুলে এসেছিল। বেলা সাড়ে ১০টার দিকে তার মা এসে ডেকে নিয়ে যাওয়ার ঘণ্টাখানেক পরেই শুনি ফাহিমা আত্মহত্যা করেছে। পরে জানতে পারি সুজ্জল নামে এক বখাটের শ্লীলতাহানির অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করে আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।

নিহত ছাত্রীর মা সুফিয়ার অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে লম্পট সুজ্জলের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে উঠেছিল ফাহিমা। সামাজিকভাবে বিচার চেয়েও কোনো ফল হয়নি। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।

কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন জানান, স্কুলছাত্রী ফাহিমার আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে ওই ছাত্রীর বাবার করা মামলায় অভিযুক্ত সুজ্জলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তে আরও কেউ জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আল-মামুন সাগর/আরএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।