ইমামের গলা কেটে ‘হিযবুত তাওহীদ’ আখ্যা দেয় বন্ধু

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৭:৩৭ পিএম, ২৮ আগস্ট ২০১৯

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মসজিদের ভেতরে ইমাম দিদারুল ইসলামকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। আর্থিক লেনদেন নিয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ইমামকে হত্যা করে তারই বন্ধু। হত্যার মোটিভ ঘুরাতে তাকে জঙ্গি সংগঠনের সদস্য অ্যাখ্যা দিতে চেয়েছিল খুনি ওহিদুর জামান (২৮)।

বুধবার বিকেলে ইমাম দিদারুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি ওহিদুর জামানকে গ্রেফতারের পর নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে একটি চিরকুট পাওয়া যায় যাতে লেখা ছিল, ‘ইমাম দিদারুল ইসলাম হিযবুত তাওহীদের সদস্য। সে আমাদের দল থেকে অস্ত্র ও টাকা নিয়ে পালিয়ে এসেছে। তাই আমরা তাকে মেরে ফেলেছি।’ আসলে খুনি পুলিশকে বিভ্রান্ত করে ঘটনাটি কোনো জঙ্গি সংগঠন ঘটিয়েছে এমনটা প্রমাণ করতে ওই চিরকুট লিখেছিল। পরে হত্যার তদন্তে নেমে এ ঘটনার একমাত্র আসামি ওহিদুর জামানকে মাদারীপুরের শিবচর এলাকা থেকে গ্রেফতার করলে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসে।

Narayanganj-1

পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ বলেন, ‘ইমাম দিদারুল ইসলামের কাছ থেকে স্বর্ণের বার কেনার কথা বলে কয়েক দফায় লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয় ঘাতক ওহিদুর জামান। পরবর্তীতে টাকা ফেরত চেয়ে চাপ দিলে ঘাতক ওহিদুর নিজেই দিদারুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সেই পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক ঘটনার আগের রাতে দিদারুলের সঙ্গে মসজিদে দেখা করে এবং বলে আগামীকাল (২১ আগস্ট) রাতে এশার নামাজের পর তাকে টাকা ফেরত দেবে। হত্যার পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘাতক ওহিদুর শিবচরের পাঁচ্চর এলাকা থেকে হত্যায় ব্যবহৃত চাপাতি, সোনারগাঁ মুড়াপাড়া থেকে ঘুমের ওষুধ ও কোকাকোলার বোতল কিনে রাখে। পরে হত্যার দিন প্রথমে কোকাকোলার সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে ইমাম দিদারুলকে অচেতন করে। পরে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী চাপাতি দিয়ে গলা কেটে তাকে হত্যা করে।

তিনি আরও জানান, পরবর্তীতে নিহতের খাতায় ‘হিযবুত তাওহীদের সদস্য, সে আমাদের দল থেকে অস্ত্র ও টাকা নিয়ে পালিয়ে এসছে তাই আমরা তাকে মেরে ফেলেছি’ এমন আরও কিছু কথা লিখে রাখে। এবং মসজিদের ওজুখানায় গোসল করে রক্ত মাখা লুঙ্গি পার্শ্ববর্তী ডোবার কচুরিপানায় ফেলে রেখে ঢাকার মিরপুর হয়ে মাদারীপুর চলে যায়। মূলত ঘাতক ওহিদুর পাওনা টাকা ফেরত না দেয়ার জন্যই পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক হত্যাকাণ্ডটি ঘটায়। ওই হত্যাকাণ্ডটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্যই নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাওহীদের নাম ব্যবহার করে। তদন্তে নিহত দিদারুল ও গ্রেফতার ওহিদুর উভয়ের এখন পর্যন্ত জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

শাহাদাত হোসেন/আরএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।