দুই দিন ধরে লাশে ঝাড়ফুঁক দিচ্ছেন ওঝা!


প্রকাশিত: ১১:২৯ এএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫

লক্ষ্মীপুরে দুই দিন আগে সাপের কামড়ে মাসুদ আলম (৩২) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হলেও তাকে ঝাড়ফুঁক দিয়ে জীবিত করা হবে, ওঝার এমন আশ্বাসে ওই লাশের দাফন করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। চেয়ারে বসিয়ে রেখে দেয়া হচ্ছে ঝাড়ফুঁক।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার শাকচর ইউনিয়নের শাকচর গ্রামের তাজুল ইসলামের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত মাসুদ আলম ওই গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তবে জেলার সির্ভিল সার্জন বলেছেন, মৃত মানুষকে জীবিত করা কোনো সুযোগ নেই। এটা শুধু প্রতারণা।

স্থানীয় লোকজন জানায়, সোমবার রাতে মাসুদ আলম বাড়ির পাশের খালে মাছ শিকার করতে যায়। এসময় বিষধর সাপ তাকে কামড় দিলে সে অচেতন হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চট্টগ্রামে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। তার লাশ বাড়িতে আনা হলে তাকে মৃত ঘোষণা করে দাফনের পরামর্শ দেয় স্থানীয় চিকিৎসক।

কিন্তু সাপের কামড়ে মাসুদ মারা যায়নি, সে বেঁচে আছে এমন দাবি করেন চরমনী এলাকার ওঝা রওশন আলী। এরপর থেকে মৃত ব্যক্তিকে চেয়ার বসিয়ে রেখে মাথায় থালা-বাটি, পায়ে মুরগীর বাচ্চা ও কোমরে সাদা কাপড় বেঁধে তন্ত্র-মন্ত্র দিতে থাকেন। প্রথম দিন এ তন্ত্র-মন্ত্র ওঝা রওশন আলী চালালেও বুধবার তন্ত্র-মন্ত্র চালাতে যোগ দিয়েছেন ভোলার লালমোহনের আরো দুই ওঝা।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শাকচর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) মো. সেলিম জানান, ওঝা রওশন আলী দাবি করছেন, মাসুদ এখনো বেঁচে আছেন। সেজন্য দুই দিন ধরে ঝাড়ফুঁক দেয়া হচ্ছে। ওঝারা দর্শণার্থীদের কাছ থেকে টাকা তুলছেন।

মাসুদ আলম এখনো বেঁচে আছেন দাবি করে ওঝা রওশন আলী সাংবাদিকদের জানান, মাসুদ আলম জীবিত রয়েছেন। তিনি ও অপর দুইজন তাকে চিকিৎসা দিচ্ছেন বলে জানান।

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. গোলাম ফারুক ভূইয়া জানান, সাপের কামড় মাসুদ আলমের মৃত্যু হয়েছে বলেই তিনি জানেন। মৃত ব্যক্তিকে বাঁচানোর কথা বলে ওই পরিবার ও এলাকাবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। এ ব্যপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কাজল কায়েস/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।