ছিলেন বিজিবি সদস্য, পালিয়ে এসে র্যাবের সব কিছু নকল করলেন
ছিলেন বিজিবি সদস্য। সেখান থেকে পালিয়ে এসে গড়ে তুললেন প্রতারক চক্র। এরপর র্যাব পরিচয় দিয়ে গত দুই বছর ধরে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল তার চক্রের সদস্যরা।
কখনো বিজিবিতে চাকরি দেয়ার নামে আবার কখনো গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে তারা হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। অবশেষে তাদের চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১-এর সদস্যরা।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার আব্দুল মান্নানের ছেলে মো. জয়নাল আবেদীন (২৭), গাজীপুর সদরের মৃত মুসলেম উদ্দিনের ছেলে মো. নাজমুল হোসেন (২৭) ও কিশোরগঞ্জের মো. রফিকুল ইসলামের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (২৯)। তারা গাজীপুরের জয়দেবপুর এলাকায় বসবাস করতেন।
রোববার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী র্যাব-১১-এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১১-এর সিইও কাজী শমসের উদ্দীন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন র্যাব-১১-এর উপপরিচালক মেজর তালুকদার নাজমুছ সাকিবসহ র্যাবের অন্যান্য কর্মকর্তারা। প্রতারণার শিকার এক বিধবার কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে তাদের গ্রেফতার করে র্যাব।
র্যাব জানায়, র্যাব সদর দপ্তরের বিভিন্ন পদের সিল ব্যবহার করে ভুয়া নোটিশ তৈরি করে ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষদের টার্গেট করে প্রতারক চক্রটি। তাদের নোটিশনামায় প্রদত্ত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে ঘুষ চায় তারা। সেই সঙ্গে ঘুষ দিলে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি মিলবে এমন আশ্বাস দেয় চক্রটি। অন্যথায় গ্রেফতারের ভয় দেখায়।
র্যাব-১১-এর সিইও কাজী শমসের উদ্দীন বলেন, শনিবার রাতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানাধীন রূপসী এলাকা থেকে র্যাবের সদস্য পরিচয়ে ঘুষ নেয়ার সময় হাতে-নাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে র্যাবের পোশাক পরিহিত এডিট করা নিজেদের ছবি, র্যাবের মনোগ্রাম সংবলিত জ্যাকেট, র্যাব সদর দপ্তরের সিল ও অফিসারদের ভুয়া স্বাক্ষর সংবলিত বিভিন্ন নোটিশ, র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা অফিসার, ডিউটি অফিসার, তদন্ত অফিসারের নামের সিল, বিজিবির আইডি কার্ড, ইউনিফর্ম, ল্যাপটপ, প্রিন্টার, মোবাইল ও একাধিক সিম কার্ড জব্দ করা হয়।
কাজী শমসের উদ্দীন আরও বলেন, গ্রেফতার হওয়া এই চক্রের প্রধান মো. জয়নাল আবেদীন ইতোপূর্বে বিজিবিতে চাকরি করতেন। চাকরিরত অবস্থায় জয়নাল আবেদীন ২০১৭ সালে বিজিবি থেকে পালিয়ে যান। পরবর্তীতে তার নেতৃত্বে প্রতারক চক্র গঠিত হয়। বিজিবিতে চাকরি দেয়ার নামে অনেক লোকের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন জয়নাল। দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকার বড় লোকদের র্যাব পরিচয় দিয়ে সমস্যা সমাধানের নামে ও মামলার ভয় দেখিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী ও জনপ্রতিনিধিদের ব্যবহার করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয় এই চক্রের সদস্যরা। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
হোসেন চিশতী সিপলু/এএম/জেআইএম